আওয়ার টাইমস নিউজ।
টাইমস স্পোর্টস ডেস্ক: দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারত-পাকিস্তানের এশিয়া কাপ ফাইনালটা যেন রূপ নিচ্ছে এক রুদ্ধশ্বাস থ্রিলারে। পাকিস্তানের ব্যাটিং ধসের পর ১৪৭ রানের লক্ষ্যটা যখন মামুলি মনে হচ্ছিল, তখন ভারতীয় টপ অর্ডারের বিপর্যয় সেই সহজ সমীকরণকেই জটিল করে তুলেছে।
টপ অর্ডারের বিপর্যয়
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ধাক্কা—ফাহিম আশরাফ ফেরালেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অভিষেক শর্মাকে। পরের ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদির গতি আর সুইংয়ে হারালেন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। ভারত তখনও সামলাতে পারেনি এই আঘাত, তার আগেই আবার ফাহিমের শিকার হলেন শুভমান গিল।
মাত্র ৪ ওভারে স্কোরবোর্ডে ২০ রান, হাতে নেই ৩ উইকেট। ১৪৭ রানের মতো ছোট লক্ষ্যও তখন ভারতের সামনে রূপ নিয়েছে এভারেস্ট সমান চ্যালেঞ্জে।
পাকিস্তানের লড়াইয়ের প্রত্যাবর্তন
এর আগে পাকিস্তান নিজের ইনিংসে দেখেছিল ভয়াবহ পতন। ৯.৪ ওভারে ৮৪ রান তোলার পর আরেকটা ৮.২ ওভারে হারাল সব ১০ উইকেট। ১১২/১ থেকে ১৪৬ অলআউট—এমন পতন সাধারণত ফাইনালের মঞ্চে আত্মঘাতী। কিন্তু বল হাতে নেমেই শাহিন-ফাহিমরা ভারতকে যে রূপকথার মতো ফিরিয়ে এনেছেন, সেটা পাকিস্তানের ক্রিকেটে এক নতুন অধ্যায়ের ইঙ্গিত।
মানসিক চাপের খেলা
ফাইনাল সবসময়ই মস্তিষ্কের খেলা। পাকিস্তানি ব্যাটাররা চাপ সামলাতে পারেননি, তাই ১৪৬-তেই থেমেছেন। ভারতীয় ব্যাটাররাও কি সেই একই ফাঁদে পা দিচ্ছেন? এতদিন যে টপ অর্ডার তাদের রান মেশিন ছিল, সেই ব্যাটাররাই ফাইনালের আলো-আঁধারিতে ভেঙে পড়ছেন।
ইতিহাসের ছায়া
পরিসংখ্যান বলছে—বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হলে পাকিস্তান এগিয়ে থাকে (১২ বারের লড়াইয়ে পাকিস্তানের ৮ জয়, ভারতের মাত্র ৪)। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতের ওপর পাকিস্তানের ১৫০ রানের বিশাল জয়ের স্মৃতি এখনও টাটকা।
আজকের ফাইনাল কি সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি? নাকি ভারত তাদের শক্তিশালী মিডল অর্ডারের অভিজ্ঞতায় ভর করে শিরোপা হাতে তুলবে নবমবারের মতো?
যে ম্যাচ শুরু হয়েছিল পাকিস্তানের ব্যাটিং ঝড়ে, মাঝপথে পরিণত হয়েছিল তাদের ধসের গল্পে, সেটাই এখন ভারতের ব্যাটিং চাপে রূপ নিয়েছে এক নাটকীয় টেস্টে। ১৪৭ রান—টি-টোয়েন্টির মানদণ্ডে তুচ্ছ। কিন্তু ফাইনালের আলো-আঁধারি, চাপ আর প্রতিপক্ষের প্রতিশোধস্পৃহা মিলেই আজ এটাকে পরিণত করেছে সত্যিকারের পাহাড়ে।