আওয়ার টাইমস নিউজ।
রহস্যময় বিশ্ব ডেস্ক: একসময় সারা পৃথিবী দাপিয়ে বেড়াত ডাইনোসর নামে ভয়ংকর এক প্রানি। ডাইনোসর নিয়ে মানুষের জানার আগ্রহ বহু কাল থেকেই। ভয়ংকর এ প্রাণিগুলো নিয়ে মানুষের জল্পনা কল্পনার কোনও শেষ নেই। আর তাই ভয়ংকর এ প্রাণিকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে অসংখ্য চলচ্চিত্র! পরিচালিত হয়েছে অসংখ্য গবেষণা ও অনুসন্ধান। এবার ডাইনোসরের ক্রিস্টালাইজড ডিমের ফসিল এবং নতুন একটি প্রজাতির সন্ধান পেয়েছে একদল চীনা বিজ্ঞানীরা।
মধ্য চীনের হুবেই প্রদেশে কামানের গোলা আকারের ডাইনোসরের ৩১টি ডিমের জীবাশ্ম বা ফসিল আবিষ্কার করেছেন তারা। এর মধ্যে তিনটি ডিমের মধ্যে ভেতরের খনিজগুলো ক্রিস্টাল অবস্থায় পেয়েছেন তারা। এসব ক্রিস্টাল ডিম নিয়ে গবেষণা করে ডাইনোসরের ডিম পাড়ার প্রক্রিয়া এবং প্যালিও এনভায়রনমেন্ট সম্পর্কে জানা সম্ভব হবে। দেশটির স্থানীয় প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে।
চীনে শি ইয়ান শহরের ছিংলং পর্বতে ডাইনোসরের একটি বাসায় ৩১টি ডিমের জীবাশ্ম পাওয়া যায়। হুবেই প্রদেশে এই প্রথম ডাইনোসরের ক্রিস্টালাইজড ডিমের ফসিল পাওয়া গেল। প্রথমে দেখলে চট করে বোঝা যায় না এগুলো আসলে কী; মনে হয় পাথর। কিন্তু ভালো করে খুঁটিয়ে দেখলে জীবাশ্ম হয়ে যাওয়া ডিমের গঠন বোঝা যায়।
৪ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার লম্বা এবং প্রায় ১২ সেন্টিমিটার চওড়া চ্যাপ্টা আকৃতির ডিমগুলোর খোসা ১ দশমিক ৩১ থেকে ২ দশমিক ৪ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পুরু। তিনটি ডিমের ফসিলে ডিমের খোসা ও এর অভ্যন্তরীণ ক্রিস্টালাইন খনিজ পদার্থগুলো ভালভাবে সংরক্ষিত আছে।
হুবেই ইনস্টিটিউট অব জিওসায়েন্সেসের বিশেষজ্ঞ চাও বি জানান, তিনটি ডিম ফাটল ছাড়া ছিল। কোনও প্রতিষ্ঠিত তত্ত্বে এই স্ফটিককৃত ডাইনোসরের ডিমের জীবাশ্মগুলোর গঠনের ব্যাখ্যা নেই।
গবেষকরা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন ডিমের জীবাশ্মগুলোর অভ্যন্তরীণ স্ফটিক খনিজ ক্যালসাইট কণার আকার শূন্য দশমিক ২ থেকে শূন্য দশমিক ৪ সেন্টিমিটার।
স্ফটিককৃত ডাইনোসরের ডিমের জীবাশ্ম বিশ্বে বিরল। এর প্রধান কারণ ডিমের ভেতরের খনিজের গঠন ও বিরূপ পরিবেশেও ভালো থাকা।
তিনটি ডিমের জীবাশ্ম মাটির নিচে থাকার পরও অক্ষত কেন রয়েছে – এমন প্রশ্নের উত্তরে চাও জানান, মতে, ডিমগুলো মাটির নিচে থাকায় সময় প্রচুর পরিমাণে সুপারস্যাচুরেটেড ক্যালসিয়াম কার্বনেট দ্রবণ ডিমের ছিদ্রগুলো দিয়ে প্রবেশ করে, এরপর খনিজগুলোকে স্ফটিকে পরিণত করে দেয়।
ডাইনোসরের ডিমের জীবাশ্মগুলো কার্বন ডেটিং করে জানা গেছে এগুলো প্রায় ৬০ থেকে ৮০ মিলিয়ন বছর আগের। অর্থাৎ মধ্য ক্রিটেসিয়াস যুগের। ছিংলং পর্বতে ১৯৯৫ সালে প্রথমবারের মতো ডাইনোসরের ডিমের ফসিল আবিষ্কৃত হয়েছিল। গবেষকরা এ পর্বতে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার স্থানে খোঁজ চালিয়েছেন।
সূত্র: চীনা গণমাধ্যম।