আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা ডা. দিলীপ কুমার রায় আজ হাজার কোটি টাকার মালিক। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং হোমিওপ্যাথি বোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে নিয়োগ, বদলি বাণিজ্য এবং প্রতারণাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।
তার বিরুদ্ধে হোমিওপ্যাথি কলেজে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ।
২০১২ সালে পাবনার ঈশ্বরদী পৌর এলাকায় প্রয়াত ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর নামে একটি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন দিলীপ রায়। এখানে ৩২ জন শিক্ষক এবং ৩৯ জন কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে তিনি পছন্দের ব্যক্তিদের স্থান দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
হোমিও বোর্ডে দীর্ঘ সময়ের দখল। আওয়ামী সরকারের আমলে টানা ১৫ বছর হোমিও বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন দিলীপ রায়। এ সময় তিনি ২৭টি নতুন কলেজের অনুমোদন দিয়ে নিয়োগ এবং বদলির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেন।
শূন্য থেকে সম্পদের শীর্ষে আশির দশকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী থেকে মাত্র তিন বছরের ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করে ডাক্তার হন দিলীপ রায়। ২০০৯ সালে আওয়ামী রাজনীতির ছোঁয়ায় বোর্ড চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই তার সম্পদের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। ঢাকার সেগুনবাগিচা এবং শান্তিনগরে কোটি কোটি টাকার একাধিক ফ্ল্যাট কেনেন তিনি।
জুয়েলারি ব্যবসার বিস্তার, রাজনীতির প্রভাব কাজে লাগিয়ে জুয়েলারি মালিকদের সংগঠন বাজুসের সভাপতি হন তিনি। বায়তুল মোকাররমে কোটি টাকার দুটি দোকান কিনে প্রতিষ্ঠা করেন গ্রামীণ জুয়েলার্স। এছাড়া, ডায়মন্ড হাউজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে বায়তুল মোকাররম এবং বসুন্ধরা মার্কেটে গড়ে তোলেন ডায়মন্ডের দুটি শোরুম।
ডায়মন্ড হাউজের প্রকৃত মালিক সৌমেন সাহা অভিযোগ করেছেন, কোনো নিয়ম না মেনে তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে শোরুম খুলেছেন দিলীপ রায়।
অর্থ পাচার ও দুর্নীতির অভিযোগ দিলীপ রায়ের বিরুদ্ধে জালিয়াতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, এবং ভারত ও কানাডায় অর্থ পাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একাধিক মামলা দায়ের হলেও তিনি ক্ষমতার প্রভাবে বারবার রেহাই পেয়েছেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য দিলীপ রায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই অভিযোগগুলো তদন্ত করা হলে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দুর্নীতির বাস্তব চিত্র উঠে আসবে। দেশের সম্পদশালী এই রাজনীতিবিদের উত্থান নিয়ে ইতিমধ্যেই জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।