আওয়ার টাইমস নিউজ।
ইসলামী ডেস্ক: ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী’চুপ থাকা একটি পরিশ্রমহীন এবাদত। চুপ থাকার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি নিজেকে পাপ কাজ থেকে রক্ষা করতে পারে। এছাড়াও কুরআন ও হাদিসে চুপ থাকার ফজিলত সম্পর্কে স্পষ্ট ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যার কিছু সংখ্যক হাদিস নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
১. চুপ থাকা পাপ থেকে রক্ষা করে।
রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন:
“مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ.”
অর্থ: যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন কল্যাণকর কথা বলে অথবা চুপ থাকে।
(সহিহ বুখারি: ৬০১৮, সহিহ মুসলিম: ৪৭৪৯)
২. জিহ্বার সংযম গুরুত্বপূর্ণ।
রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন:
“أَمْسِكْ عَلَيْكَ لِسَانَكَ، وَلْيَسَعْكَ بَيْتُكَ، وَابْكِ عَلَى خَطِيئَتِكَ.”
অর্থ: তোমার জিহ্বাকে সংযত রাখো, তোমার ঘরকে প্রশস্ত করো এবং তোমার পাপের উপর কান্না করো।
(তিরমিজি: ২৪০৬)
৩. মুমিনের অন্যতম গুণ চুপ থাকা।
হাদিসে এসেছে:
“وَهَلْ يَكُبُّ النَّاسَ فِي النَّارِ عَلَى وُجُوهِهِمْ إِلَّا حَصَائِدُ أَلْسِنَتِهِمْ؟”
অর্থ: মানুষকে জাহান্নামের মধ্যে তাদের মুখমণ্ডলসহ নিক্ষেপ করার প্রধান কারণ হলো তাদের জিহ্বার কৃত অপকর্ম।
(তিরমিজি: ২৪০৯)
৪. অহেতুক কথা এড়িয়ে চলার নির্দেশ।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
“مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ.”
অর্থ: মানুষ কোন কথা উচ্চারণ করে না, তার কাছে একজন পর্যবেক্ষক (ফেরেশতা) সদা প্রস্তুত থাকে।
(সুরা ক্বাফ: ৫০:১৮)
৫. জ্ঞান বৃদ্ধি পায় চুপ থাকার মাধ্যমে
ইমাম আলী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন:
“إِذَا تَمَّ الْعَقْلُ نَقَصَ الْكَلَامُ.”
অর্থ: যখন মানুষের বুদ্ধি পরিপূর্ণ হয়, তখন তার কথা কমে যায়। (মুয়াত্তা মালিক: ১৭৭৮)
এছাড়াও চুপ থাকার রয়েছে অসংখ্য উপকারিতা:
১. গিবত, মিথ্যা এবং চোগলখুরি থেকে মুক্ত থাকা।
২. সমাজে অশান্তি কমানো।
৩. আত্মিক শান্তি এবং স্থিরতা বৃদ্ধি।
৪. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।
৫. অপ্রয়োজনীয় কথা থেকে নিজেকে সংযত রাখা।
**চুপ থাকা একজন মুমিনের চরিত্রকে সুন্দর করে তোলে এবং এটি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। অতএব, যখন কথা বলার প্রয়োজন হয়, তখন কল্যাণমূলক কথা বলা উচিত। অন্যথায় চুপ থাকা উত্তম। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে এর উপর আমল করার তৌফিক দান করুক।
আমীন।