আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। বর্তমানে প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের একজন এই রোগে ভুগছেন, যা আগে ছিল প্রতি পাঁচজনে একজন। বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৃণমূল পর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ শুরু হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
রোববার (২৪ নভেম্বর) চট্টগ্রামের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং করণীয়’ শীর্ষক এক সাংবাদিক কর্মশালায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)-এর সহযোগিতায় এই কর্মশালার আয়োজন করে প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)। কর্মশালায় চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, দেশে মোট মৃত্যুর ৭১ শতাংশই ঘটে স্ট্রোক, ক্যান্সার, কিডনি রোগ, শ্বাসতন্ত্রের রোগ এবং ডায়াবেটিসের মতো অসংক্রামক রোগের কারণে। এসব রোগের অন্যতম প্রধান ঝুঁকি উচ্চ রক্তচাপ। তবে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে দেশের স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র ৪ দশমিক ২ শতাংশ ব্যয় করা হয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ সবচেয়ে কম।
এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে দেশের প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে ওষুধের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা এবং চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ওষুধ উৎপাদন জরুরি। তৃণমূল পর্যায়ে বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করলে এটি অসংক্রামক রোগ ও অকালমৃত্যু কমিয়ে আনতে ব্যয়-সাশ্রয়ী উদ্যোগ হিসেবে কাজ করবে।
জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সরবরাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি ব্যয়-সাশ্রয়ী এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
এছাড়াও প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, উচ্চ রক্তচাপের মতো অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য বাজেট বৃদ্ধি এবং ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। এটি অকালমৃত্যু রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
কর্মশালায় আরও বলা হয়, জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য গণমাধ্যমের সক্রিয় ভূমিকা এবং সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সঠিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপসহ অন্যান্য অসংক্রামক রোগের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।