আওয়ার টাইমস নিউজ।
ইসলামী ডেস্ক: ইসলামের প্রতিটি আমলে রয়েছে অগণিত কল্যাণ এবং প্রত্যেক আমলের পেছনে আছে বিশেষ ফজিলত। সূরা ফাতহি, যা কোরআনের ৪৮ নম্বর সূরা, বিশেষভাবে তাৎপর্যময় এবং এতে রয়েছে আল্লাহর দয়া ও বিজয়ের সুসংবাদ। যোহরের নামাজের পর সূরা ফাতহি পাঠ করা ইসলামী পরিমণ্ডলে একটি সুন্নতি আমল হিসেবে বিবেচিত।
সূরা ফাতহির পরিচিতি:
সূরা ফাতহি একটি মদিনায় অবতীর্ণ সূরা। এটি “বিজয়ের সূরা” হিসেবে পরিচিত। হুদাইবিয়া সন্ধির পর যখন মুসলিমদের বিজয়ের বার্তা ঘোষণা করা হয়েছিল, তখন এই সূরাটি অবতীর্ণ হয়। এতে মুসলমানদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ, ক্ষমা, এবং আল্লাহর দয়া।
আল্লাহ তাআলা সূরা ফাতহি সম্পর্কে বলেন:
إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُّبِينًا
“নিশ্চয়ই আমি আপনার জন্য স্পষ্ট বিজয় দান করেছি।”
— (সূরা ফাতহি, ৪৮:১)
যোহরের নামাজের পর সূরা ফাতহি পাঠের ফজিলত:
যোহরের নামাজ দিনের মাঝামাঝি সময়ে আদায় করা হয়, যা দিনের কর্মব্যস্ততার মধ্যেও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের এক সুন্দর উপায়। যোহরের নামাজের পর সূরা ফাতহি পাঠ করলে মুসলিম জীবনে রয়েছে বিশেষ ফজিলত।
১. আল্লাহর রহমত প্রাপ্তি:
আল্লাহর কিতাবে সূরা ফাতহিকে বিজয় ও রহমতের সূরা বলা হয়েছে। এটি পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতি বিশেষ রহমত নাজিল করেন।
২. দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি:
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“مَنْ قَرَأَ سُورَةَ الْفَتْحِ كَانَ لَهُ كَثْرَةُ الْخَيْرِ وَالنَّصْرُ فِي الدُّنْيَا وَرِزْقٌ وَاسِعٌ فِي الْآخِرَةِ.”
“যে ব্যক্তি সূরা ফাতহি পাঠ করবে, তার জন্য পৃথিবীতে কল্যাণ বৃদ্ধি, বিজয় এবং পরকালে প্রশস্ত রিজিক নিশ্চিত হবে।”
৩. রিজিকে বরকত:
সূরা ফাতহি পাঠ করলে জীবনের সকল ক্ষেত্রে বরকত আসে। রিজিকের সংকট দূর হয় এবং অভাব-অনটন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৪. আত্মিক প্রশান্তি:
যোহরের নামাজের পর সূরা ফাতহি পাঠ করা হৃদয়কে প্রশান্ত করে এবং আত্মবিশ্বাস জোগায়। এটি মুমিনের ঈমান শক্তিশালী করে।
ইসলামি পণ্ডিতদের মতামত:
বিখ্যাত ইসলামিক স্কলার ইবনে কাসির (রহ.) তার তাফসিরে উল্লেখ করেছেন যে, সূরা ফাতহি মুসলমানদের জীবনে বিজয়, দয়া এবং শান্তির প্রতীক। ইমাম নববি (রহ.) বলেন:
“سورة الفتح هي باب الخير والنصر، فمن قرأها بعد الصلاة نال خير الدنيا والآخرة.”
“সূরা ফাতহি কল্যাণ ও বিজয়ের দরজা। যে ব্যক্তি নামাজের পর এটি পাঠ করবে, সে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ লাভ করবে।”
উপসংহার:
যোহরের নামাজের পর সূরা ফাতহি পাঠ করা ইসলামে একটি প্রশংসনীয় আমল। এটি শুধু আল্লাহর দয়া ও রহমত লাভের মাধ্যম নয়, বরং দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতার একটি চাবিকাঠি। মুসলমানদের উচিত এ আমলকে নিজেদের জীবনে অন্তর্ভুক্ত করা এবং আল্লাহর কাছ থেকে শান্তি ও কল্যাণ প্রার্থনা করা।
লেখক: ইসলামী বিষয়ে গবেষক