আওয়ার টাইমস নিউজ।
ইসলামী ডেস্ক: রাবেয়া বসরী ইসলামের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মহিলা। তিনি ৭ম শতাব্দীতে (রাউল ৮০৪ খ্রিস্টাব্দে) বসরাতে জন্মগ্রহণ করেন, যা বর্তমানে ইরাকের দক্ষিণ অংশে অবস্থিত। রাবেয়া বসরী ছিলেন একজন অমুখী সন্ন্যাসিনী (তাসাউফের অনুসারী), যিনি আল্লাহর প্রতি গভীর ভালোবাসা ও ভক্তির কারণে ইসলামী ইতিহাসে এক অসাধারণ স্থান অধিকার করেছেন। তার জীবন ছিল এক সেরা দৃষ্টান্ত দানের পথ।
জীবনযাত্রা:
রাবেয়া বসরী একজন দীনদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবার ছিল খুবই গরিব, কিন্তু তিনি ছোটবেলাতেই এক বিশেষ ধরনের আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। তার বাবা-মা মারা যাওয়ার পর, তিনি একটি দাসী হিসেবে বিক্রি হয়ে যান। কিন্তু তার প্রগাঢ় ঈমান, মনোসংযোগ এবং আল্লাহর প্রতি গভীর ভালোবাসা তাকে দাসী জীবন থেকে মুক্তি দেয় এবং তিনি আধ্যাত্মিক পথের দিকে চলে যান।
আধ্যাত্মিক জীবন:
রাবেয়া বসরী তার জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত আল্লাহর সাথে সংযুক্ত রাখতে চেষ্টা করতেন। তার জীবন ছিল এক অকৃত্রিম আধ্যাত্মিক সাধনা ও দেহের প্যারিস্থিতির প্রতি অবহেলা। তিনি একান্তভাবে আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠ ভক্তি দেখিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন: “আমি আল্লাহকে ভালোবাসি না তার জান্নাতের কারণে, বরং আমি তাকে ভালোবাসি তার নিজ সত্তার কারণে।”
তাসাউফ এবং আল্লাহর প্রেম:
রাবেয়া বসরী ছিল তাসাউফের অন্যতম প্রখ্যাত ব্যাক্তিত্ব, যিনি আল্লাহর প্রেম ও ভক্তির প্রতি তার অন্তরের গভীরতা প্রকাশ করেছিলেন। তার উপদেশ ও নীতি সাধারণ মুসলিমদের জন্য এক বিশেষ আলোর পথের মতো ছিল। তিনি আল্লাহর প্রেমে ডুবে থাকতেন, তার শ্বাসের মধ্যে ছিল এক অপূর্ব আধ্যাত্মিক শান্তি।
প্রধান বৈশিষ্ট্য:
বিশুদ্ধ ভক্তি: রাবেয়া বসরীর জীবন ছিল আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীলতা ও ভক্তির প্রতীক।
আধ্যাত্মিক জ্ঞান: তিনি তাসাউফের গভীর জ্ঞান ধারণ করতেন এবং তা মনের মাধ্যমে অর্জন করেছিলেন।
সাধনাশীলতা: দুনিয়ার প্রতি তার অবহেলা এবং আল্লাহর দিকে গভীর মনোনিবেশ তার জীবনকে এক বিশেষ আধ্যাত্মিক মর্যাদা দেয়।
মৃত্যু:
রাবেয়া বসরী তার জীবনকালের শেষে বসরাতে মারা যান, তবে তার উপদেশ, জীবনদর্শন ও আল্লাহর প্রতি অনুরাগ এখনো মুসলিমদের জন্য এক অমূল্য গাইডলাইন হয়ে রয়েছে।
উপসংহার;
রাবেয়া বসরী (রহ.) ইসলামের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম। তার জীবনের প্রতিটি দিকই ছিল আল্লাহর প্রতি গভীর প্রেম ও আধ্যাত্মিক সাধনার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। তাকে মুসলমানদের জন্য এক বিশাল আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শক হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যিনি আল্লাহর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক স্থাপন করেছেন এবং পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার পরও তার স্মৃতি মুসলিম সমাজে চিরকাল জীবিত থাকবে।