আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের রাজনীতি নতুন করে অস্থিরতায় জড়াচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কারাগারে থাকলেও তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু করেছে। তাদের চার দফা দাবি পূরণের জন্য ইমরান খানের ডাকা সমাবেশকে কেন্দ্র করে উঠছে প্রশ্ন, পাকিস্তানে কি সরকার পতনের গণঅভ্যুত্থান ঘটতে যাচ্ছে?
এর আগে ২০২৩ সালের আগস্টে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পর থেকেই তার সমর্থকরা দেশব্যাপী আন্দোলনে নেমেছে। তাদের দাবি—ইমরান খানের মুক্তি, বেআইনি গ্রেপ্তার বন্ধ করা, নির্বাচনী কারচুপির বিচার, এবং সংবিধানের ২৬তম সংশোধনীর বাতিল।
রোববার (২৪ নভেম্বর) ইমরান খানের ডাকা চূড়ান্ত সমাবেশে যোগ দিতে পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কর্মী-সমর্থকরা গাড়ি বহর নিয়ে রাজধানী ইসলামাবাদের দিকে ছুটে আসে। পিটিআই এই সমাবেশকে পাকিস্তানের স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
এদিকে বিক্ষোভ ঠেকাতে ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি করেছে সরকার। শহরের প্রধান সড়কগুলো কন্টেইনার দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে জনসাধারণের যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। এমনকি সোমবার ইসলামাবাদের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন-এর বরাতে জানা গেছে, সরকারের এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও পিটিআই কর্মীরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন আরও কঠোর হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ইমরান খানের মুক্তি ও তার বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সম্ভাব্য জয় পাকিস্তানের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে বিতর্ক তুঙ্গে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, ইমরান খানের এই ডাকে সহিংসতা শুরু হলে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আরও গভীর হবে।
অন্যদিকে ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি এক ভিডিও বার্তায় সমর্থকদের সমাবেশে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা এই বার্তাকে বিপজ্জনক আখ্যা দিয়ে সতর্ক করেছেন, যদি এই বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেয়, তাহলে পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ রাজনীতির স্থিতিশীলতা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠবে।
ইমরান খানের এই আন্দোলনকে অনেকেই সরকার পতনের চূড়ান্ত চেষ্টা হিসেবে দেখছেন। তবে পাকিস্তানের ইতিহাসে সামরিক হস্তক্ষেপের যে রীতি রয়েছে, তা নতুন করে পরিস্থিতিকে আরও অস্থির করে তুলতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, গণঅভ্যুত্থান হোক বা না হোক, পাকিস্তানের রাজনৈতিক সংকট আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে চলেছে।
পাকিস্তানের বর্তমান অস্থির পরিস্থিতি এবং ইমরান খানের আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে বলে আপনি মনে করেন? জানিয়ে দিন আমাদের কমেন্ট বক্সে..