আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: ২০২৪ এর জুলাই-অগাস্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোল শুধু দেশের ভেতরে নয়, বরং দেশের বাহিরেও ছড়িয়ে পড়েছিল, অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মনেও বিরাট প্রভাব ফেলেছিল। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে উত্তাল আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে গিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করার দায়ে ১৮৮ জন বাংলাদেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার হন। কিন্তু আরব আমিরাত সরকার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ধাপে ধাপে তাদের মুক্তি দিয়েছে।
আজ ২৯ নভেম্বর, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী, দ্বিতীয় দফায় ৭৫ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর প্রথম দফায় ৫৭ জন মুক্তি পেয়েছিলেন। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত ১৮৮ জন মুক্তি পেলেও এই ঘটনা আমাদের জন্য গভীর চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছিল এক ঐতিহাসিক প্রতিবাদ। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশের ছাত্র-জনতা যখন রাস্তায় নেমেছিল, প্রবাসী বাংলাদেশিরাও সেই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আরব আমিরাতের রাস্তায় বিক্ষোভ করেন।
কিন্তু দাঙ্গা, যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, এবং সম্পদহানির অভিযোগ এনে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এমনকি এই ঘটনার জেরে বাংলাদেশিদের জন্য আমিরাতে ভিসা সুবিধা বন্ধের ঘোষণাও দেওয়া হয়।
আরব আমিরাতের ক্ষমাশীলতা ও বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা
আরব আমিরাত সরকার এই প্রবাসীদের প্রতি মানবিক আচরণ দেখিয়েছে। বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আলোচনা ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে প্রবাসীদের মুক্তি সম্ভব হয়েছে।
কিন্তু এই মুক্তির ঘটনা আমাদের মনে একটি প্রশ্ন তোলে—যদি বাংলাদেশের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার শাসন অব্যাহত থাকত, তাহলে কি এই মুক্তি আদৌ সম্ভব হতো? শেখ হাসিনার সরকার ছাত্র আন্দোলন দমন এবং কণ্ঠরোধে যেভাবে শক্তি প্রয়োগ করেছে, তাতে প্রবাসীদের প্রতি মানবিকতার আশা করাও কঠিন।
এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয়, মানবিক ও ন্যায্য নেতৃত্ব ছাড়া জাতির উন্নয়ন সম্ভব নয়। শেখ হাসিনার শাসনব্যবস্থায় ছাত্র আন্দোলন দমন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা, এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দিন দিন বেড়েছে।
অন্যদিকে, আরব আমিরাতের মতো বিদেশি সরকার মানবিকতার ভিত্তিতে প্রবাসীদের মুক্তি দিয়ে উদারতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই ঘটনা প্রমাণ করে, কেবল উন্নত কূটনীতি নয়, একটি দেশের নেতৃত্বের মনোভাবও গুরুত্বপূর্ণ।