
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনে মধ্যপ্রাচ্যে শক্তির ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আসাদের পাঁচ দশকের শাসনের অবসান কেবল সিরিয়ার ভেতরেই নয়, বরং ইরান ও রাশিয়ার মতো আঞ্চলিক শক্তিগুলোর প্রভাবেও উল্লেখযোগ্য আঘাত হেনেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিবর্তন তুরস্কের ভূমিকাকে আরও বেশি আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে।
সিরিয়া দীর্ঘদিন ধরে ইরান ও হিজবুল্লাহর জন্য একটি সংযোগ দেশ হিসেবে কাজ করত। তবে আসাদের পতনে ইরানের অস্ত্র সরবরাহের রুট ব্যাহত হওয়ায় তেহরান তার আঞ্চলিক অবস্থানে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। এতে ইসরায়েল কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় এসেছে, কারণ ইরানের প্রভাবকে তারা তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়্যব এরদোয়ান দীর্ঘদিন ধরে আসাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সিরিয়ান শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হয়ে তুরস্ক আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের সমর্থন জোরদার করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও এরদোয়ান সরাসরি হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর মতো গোষ্ঠীকে সহায়তার কথা অস্বীকার করেছেন।
সিরিয়ান শরণার্থীর চাপ, কুর্দি গোষ্ঠীর উপস্থিতি এবং সীমান্ত নিরাপত্তা তুরস্কের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। সিরিয়ার পরিস্থিতি সমাধানে তুরস্কের কৌশলগত অবস্থান এবং ন্যাটোর সদস্য হিসেবে তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
আল-কায়েদা থেকে উদ্ভূত এইচটিএস সাম্প্রতিক সময়ে নিজেদের জাতীয়তাবাদী শক্তি হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের অতীত এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে তুরস্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এদিকে, ব্রিটিশ গোয়েন্দা কর্মকর্তা জন সাউরস বলেছেন, বিদ্রোহীদের সামনে আসাদের পতনের পর একটি ঐক্যবদ্ধ সিরিয়া গঠনের কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। তুরস্ক সম্ভবত এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধনে এবং নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করতে পারে।