আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: শিশুদের কথা বলা তাদের মানসিক ও সামাজিক বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে অনেক সময় দেখা যায়, তারা অতিরিক্ত কথা বলে যা তাদের পড়াশোনা, বিশ্রাম এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের শান্তি নষ্ট করতে পারে। তাই বাচ্চাদের স্বাস্থ্যকর মাত্রায় কথা বলতে উৎসাহিত করার কিছু পদ্ধতি প্রয়োজন।
কেন বাচ্চারা অতিরিক্ত কথা বলে?
১. উৎসাহ পাওয়া: বাচ্চারা অনেক সময় বাড়ির বড়দের কাছ থেকে বেশি মনোযোগ পেতে চায়।
২. উৎসাহী মনোভাব: নতুন জিনিস জানার বা জানানোর প্রবল ইচ্ছা তাদের বারবার কথা বলতে বাধ্য করে।
৩. অতিরিক্ত এনার্জি: কিছু বাচ্চার মধ্যে এনার্জি বেশি থাকে এবং তারা সেই এনার্জি কথার মাধ্যমে প্রকাশ করে।
৪. সামাজিক দক্ষতা ঘাটতি: অনেক সময় তারা বুঝতে পারে না কখন কথা থামাতে হয়।
কীভাবে অতিরিক্ত কথা বলা কমানো যায়?
১. শ্রবণ ও কথা বলার ব্যালেন্স শেখানো:
বাচ্চাদের শেখাতে হবে, শুধু নিজের কথা বলাই নয়, অন্যদের কথাও মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। পরিবারের সবাই একত্রে বসে “শ্রবণ ও কথা বলার” একটি খেলায় অংশ নিতে পারে, যেখানে সবাই পালা করে কথা বলবে এবং অন্যদের শুনবে।
২. নিয়ন্ত্রিত সময় নির্ধারণ:
বাচ্চাদের নির্দিষ্ট সময়ে কথা বলার সুযোগ দিন। উদাহরণস্বরূপ, পড়াশোনার সময় ও বিশ্রামের সময়ে কথা বলা নিষেধ করতে পারেন। তবে তাদের জন্য নির্ধারিত ‘মজা করার’ সময়ে তারা ইচ্ছেমতো কথা বলতে পারবে।
৩. বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা:
অতিরিক্ত কথা বলার সময় বাচ্চাদের হাতে উপযুক্ত বই তুলে দিন। এতে তারা মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে শিখবে এবং ধীরে ধীরে অতিরিক্ত কথা বলা কমে যাবে।
৪. ধৈর্য ও নিয়ম শেখানো:
বাচ্চাদের ছোট ছোট নিয়ম শেখানো জরুরি, যেমন:
কেউ কথা বলার সময় তার কথার মাঝে না ঢোকা।
সময়মতো কথা বলা এবং সময়মতো চুপ থাকা।
৫. সৃজনশীল কাজে ব্যস্ত রাখা:
শিল্পকর্ম, পাজল, বা হস্তশিল্পের মতো সৃজনশীল কাজে বাচ্চাদের ব্যস্ত রাখুন। এতে তারা তাদের মনের ভাব সৃজনশীল উপায়ে প্রকাশ করতে পারবে।
৬. পজিটিভ রিইনফোর্সমেন্ট:
বাচ্চারা নিয়ম মেনে কম কথা বললে তাদের প্রশংসা করুন এবং ছোটখাটো পুরস্কার দিন। এতে তারা ভালো আচরণে উৎসাহিত হবে।
৭. সঠিক দৃষ্টান্ত স্থাপন:
বাড়ির বড়রা যদি নিয়ন্ত্রিতভাবে কথা বলে এবং অন্যদের কথা শুনে, বাচ্চারাও তাদের দেখে এই অভ্যাস রপ্ত করবে।
(বাচ্চাদের কথা বলা বন্ধ করা নয়, বরং তাদের নিয়ন্ত্রিতভাবে কথা বলার অভ্যাস গড়ে তোলাই মূল লক্ষ্য। ভালো অভ্যাস, প্রশিক্ষণ ও পর্যাপ্ত সময় দিলেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।)
সতর্কতা:
শিশুর অতিরিক্ত কথা বলার সমস্যা কখনও কখনও মানসিক বা স্নায়বিক সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। তাই যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অতিরিক্ত মাত্রায় বৃদ্ধি পায়, বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।