আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দেশের প্রশাসনিক প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১টা ৫৪ মিনিটে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। প্রাথমিকভাবে সচিবালয়ের ফায়ার সার্ভিস ইউনিট কাজ শুরু করলেও আগুনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পরে ১৮টি ইউনিট যুক্ত হয়। তবে ভোর ৪টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনটি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দপ্তর হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে রয়েছে:
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়
অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগ
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ
অগ্নিকাণ্ডের ফলে সেগুনবাগিচা-পুরানা পল্টনের পুরো এলাকা কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। আশপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সমন্বয় করতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম জানিয়েছেন, উদ্ধার তৎপরতায় ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের সময় উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর সময় একটি কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকরা তাকে বাঁচাতে ব্যর্থ হন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ওই কর্মী বিকল্প পানির সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য রাস্তা পার হওয়ার সময় কাভার্ডভ্যানটি তাকে ধাক্কা দেয়। চালক পালানোর চেষ্টা করলেও আশপাশের শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড দিয়ে তাকে আটক করে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক বলেন, “আমাদের ১৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। তবে এখন পর্যন্ত আগুনের কারণ বা ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যায়নি। এটি একটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
সচিবালয়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ভবনে এমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কমিটি গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।