আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: যশোরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে দলীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান একটি উন্নত ও সুশাসনপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেন। ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, এই সম্মেলনে দেশব্যাপী রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, ক্ষমতা দখল নয়, বরং দেশের সুশাসন প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও দুঃশাসনমুক্ত একটি উন্নত রাষ্ট্র গড়তে চাই। এ জন্য আমরা জনগণের ভালোবাসা, সমর্থন ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, যে জাতি অতীতে স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছে, তাদের কাছে আমাদের আহ্বান—আসুন, দেশের উন্নতির জন্য একসঙ্গে কাজ করি। আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা একটি সুশৃঙ্খল, ন্যায্য ও সুষ্ঠু সমাজ গড়তে ভূমিকা রাখবে।
নারীদের ঘরের বাইরে বের হতে না দেওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে জামায়াতের আমির বলেন, এ ধরনের মিথ্যা প্রচারণা বন্ধ করতে হবে। ইসলামের ইতিহাসে আমরা দেখেছি, নারীরা কঠিন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। যেমন, ওহুদের যুদ্ধে হজরত নুসাইবা (রা.) নবিজি (সা.)-এর সুরক্ষায় নিয়োজিত ছিলেন। বর্তমান সময়ে নারীরা তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা দিয়ে দেশের উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। কোরআনসম্মত সমাজ প্রতিষ্ঠিত হলে নারীরা মর্যাদা ও সম্মান পাবেন এবং দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, এবং জোরপূর্বক সম্পত্তি দখল থেকে দূরে থাকুন। আমাদের পূর্বসূরিদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা না করে একটি ন্যায়নিষ্ঠ সমাজ গড়ে তুলুন। আমরা যেন সবাই সৎ পথে থেকে নিজেদের দায়িত্ব পালন করি।
ডা. শফিকুর রহমান জাতিকে বিভাজনের বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেন, এই দেশ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার। আমাদের সংবিধান সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছে। তাই বিভেদ ভুলে আমরা একসঙ্গে কাজ করব।
তিনি ভারতের রাজনীতি এবং প্রতিবেশী দেশের প্রভাব নিয়েও আলোচনা করেন। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
সম্মেলনে সকাল থেকেই হাজারো নেতা-কর্মী যশোরের ঈদগাহ মাঠ, আশপাশের সড়ক এবং ঐতিহাসিক টাউন হল প্রাঙ্গণে জড়ো হন। জনসভার মতো রূপ নেওয়া এই অনুষ্ঠানে দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
এই সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্যে উঠে এসেছে একটি দুর্নীতিমুক্ত, সুশাসনভিত্তিক এবং মর্যাদাসম্পন্ন সমাজ গড়ার পরিকল্পনা। তার আহ্বান দলীয় নেতা-কর্মীদের জন্য নতুন দিশা তৈরি করতে পারে এবং জাতীয় উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।