আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন সচিবালয়ে একই সময়ে তিনটি স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা সবার মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সাত, ছয় এবং আট তলার তিনটি পৃথক স্থানে একই সময়ে আগুন লাগার ঘটনা সাধারণ শর্টসার্কিটের চেয়ে অনেক বেশি সন্দেহজনক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মধ্যরাতের এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে ভবনটির বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে আগুন লাগার ধরন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সচিবালয়ের পুরোনো ভবনগুলোর অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার ত্রুটি দীর্ঘদিন ধরেই আলোচিত।
সাবেক ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শাহিদউল্লাহ এবং ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ খান এই ঘটনার পেছনে পরিকল্পিত নাশকতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তারা জানান, একই সময়ে বিভিন্ন স্থানে আগুন লাগার ঘটনা সাধারণ শর্টসার্কিটের মাধ্যমে হওয়া অসম্ভব। পরিকল্পিতভাবে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে আগুন লাগানোর সম্ভাবনাও তারা দেখছেন।
গত ছয় বছরে সচিবালয়ে পাঁচটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই শর্টসার্কিটকে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তবে সেগুলোর ক্ষয়ক্ষতি ছিল সীমিত। এবারকার ঘটনায় একাধিক স্থানে আগুন লাগার ফলে এটি স্বাভাবিক ঘটনা নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে এবং ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করছে।
উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা
১. সচিবালয়ের ভবনগুলোতে আধুনিক অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা স্থাপন করা।
২. বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার ত্রুটি দূর করা।
৩. নিরাপত্তা কর্মীদের দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করা।
৪. প্রতিটি ভবনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ চালানো।
৫. ভবিষ্যৎ নাশকতা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন।
সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ উদঘাটন এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব।