আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে উৎসবের বদলে হতাশার ছায়া। দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ৪ কোটি শিক্ষার্থীর জন্য ৪১ কোটি বই প্রয়োজন থাকলেও বিতরণ হয়েছে মাত্র ৬ কোটি। বই হাতে পাওয়ার আনন্দে কেউ কেউ খুশি হলেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থী খালি হাতে ফিরেছে, যা তাদের শিক্ষার শুরুতেই হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এবারের বই বিতরণে ধীরগতির পেছনে রয়েছে একাধিক বড় চ্যালেঞ্জ:
১. শিক্ষাক্রম পরিবর্তন ও সংশোধন: রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে ৪৪১টি বই নতুন করে পরিমার্জন করতে হয়েছে, যা সময়সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
২. প্রশাসনিক জটিলতা: আগের দরপত্র বাতিল করে নতুন দরপত্র আহ্বান এবং ছাপার প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করতে দীর্ঘ সময় লেগেছে।
৩. অভিজ্ঞতার অভাব: এনসিটিবিতে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অভিজ্ঞতা কম থাকায় মুদ্রণ প্রক্রিয়া ধীর হয়েছে।
৪. ষড়যন্ত্র ও বাধা: বই সরবরাহের প্রতিটি ধাপে ষড়যন্ত্র এবং প্রশাসনিক বাধা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।
বছরের প্রথম দিনে বই হাতে পাওয়ার আনন্দে মেতে ওঠার বদলে শিক্ষার্থীদের অনেকেই হতাশায় দিন কাটিয়েছে। বই না পাওয়ায় তাদের পড়াশোনা শুরুর প্রস্তুতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বই বিতরণে বিলম্বের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এবারের বই মুদ্রণের কাজটি ছিল যুদ্ধের মতো। বই ছাপানোর প্রতিটি ধাপে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাতে আরও দুই মাস লাগতে পারে।
তবে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে, ভবিষ্যতে পরিকল্পনা আরও সুসংহত করা হবে। “উন্নতমানের কাগজ ও মলাট ব্যবহারের ফলে এবার বইগুলো টেকসই হবে বলে জানান এই উপদেষ্টা।
বই বিতরণে বিলম্ব হলেও এনসিটিবি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের অনলাইন সংস্করণ চালু করেছে। শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে এনসিটিবির ওয়েবসাইট থেকে প্রয়োজনীয় বই ডাউনলোড করতে পারবে। এ উদ্যোগ পাঠ্যপুস্তক সংকটে সাময়িক সমাধান হতে পারে।
বই বিতরণে এবারের সংকট শিক্ষার্থীদের হতাশ করলেও সরকারের উদ্যোগে কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। উন্নতমানের বই ও অনলাইন সংস্করণ ভবিষ্যতের শিক্ষাব্যবস্থায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে পরিকল্পনার ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে হবে।