নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে চারদিন ধরে চলা ভয়াবহ দাবানল এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। ছয়টি অঙ্গরাজ্যের ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সম্মিলিতভাবে কাজ করলেও দাবানলের তীব্রতা কমানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১০ জন, এবং ধ্বংস হয়ে গেছে হাজার হাজার অবকাঠামো।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল পর্যন্ত আগুনের মাত্র ৬ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইটন, প্যালিসেইডস ও হার্স্ট এলাকা। ইটনে পুড়ে গেছে প্রায় ১৩ হাজার একর জমি, প্যালিসেইডসে ১৯ হাজার একর, এবং হার্স্টে ৭৭১ একর। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে বহু ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ঐতিহাসিক স্থান ধ্বংসের মুখে পড়েছে।
দাবানলের কারণে ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আরও ২ লাখ মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ১০ হাজারেরও বেশি বাড়ি, গাড়ি এবং অন্যান্য স্থাপনা।
লস অ্যাঞ্জেলেসের শেরিফ রবার্ট লুনা জানিয়েছেন, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। শুধুমাত্র ইটন এলাকাতেই চার থেকে পাঁচ হাজার অবকাঠামো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। প্যালিসেইডস এলাকায় ধ্বংস হয়েছে আরও পাঁচ হাজারের বেশি স্থাপনা।
এদিকে দাবানল পরিস্থিতি সামাল দিতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শুরু হয়েছে। কানাডা থেকে বিশেষায়িত উড়োজাহাজ এবং ২৫০ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
দাবানলের পাশাপাশি লুটপাটের ঘটনাও ঘটছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে, এবং ইতোমধ্যে লুটপাটের অভিযোগে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মানবিক সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন হলিউড তারকা এবং সামাজিক সংগঠনগুলো। অভিনেত্রী জেমি লি কার্টিস তার পরিবারের পক্ষ থেকে ১০ লাখ ডলার অনুদান দিয়েছেন। শেফ হোসে আন্দ্রেস দাবানলকবলিতদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছেন।
ফায়ার সার্ভিস প্রধান অ্যান্টনি ম্যারন বলেছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ধ্বংসস্তূপ থেকে দেহাবশেষ শনাক্ত করতে বিশেষ দল কাজ করবে। পাশাপাশি, ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ পরিমাণ নির্ধারণে দীর্ঘ সময় লাগবে।