১৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১৫ই শাবান, ১৪৪৬
সর্বশেষ
বাংলাদেশ থেকে নেপালে রপ্তানি হলো ৩৩৬ মেট্রিক টন আলু
মোদির কাছে ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ: ট্রাম্পের মূর্তিবদ্ধ মন্তব্য, “আমি এটা মোদির হাতে ছেড়ে দেব”
তেঁতুলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
তেঁতুল খেলে রক্ত পানি হয়ে যায়, সত্যিই কি তাই? জানুন এর সত্যতা কতটুকু
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ইলন মাস্কের ভার্চুয়াল বৈঠক: নতুন দিগন্তের ইঙ্গিত?
শবে বরাত উপলক্ষে বায়তুল মোকাররমসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন
আজ পবিত্র শবে বরাত, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের রাত
পুতিন-ট্রাম্প ফোনালাপে ইউক্রেন যুদ্ধের শেষ, শান্তির নতুন আশা!
ইসরায়েলি রোগীদের চিকিৎসা দিতে অস্বীকার, অস্ট্রেলিয়ায় দুই স্বাস্থ্যকর্মী বরখাস্ত

‘হাজার হাজার’ ফি’লিস্তিনি নারী ও নিষ্পাপ শি’শুদের গ’ণহত্যার ই’ন্ধনকারী হিসেবে জো বাইডেনের নির্লজ্জ বিদায়

                  সম্পাদকীয় কলাম….   

      হুসাইন আল আজাদ ইবনে নোয়াব আলী।

আওয়ার টাইমস নিউজ।

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ  বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে জো বাইডেনের নেতৃত্বে মার্কিন শাসনব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় সমাপ্তির পথে। যদিও তিনি আমেরিকার অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি এবং স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছেন, তার পররাষ্ট্রনীতি, বিশেষত মধ্যপ্রাচ্য নীতি, ব্যাপক বিতর্ক এবং সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি আগ্রাসন, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং মার্কিন সামরিক সহায়তা সংক্রান্ত নীতিগুলো বাইডেন প্রশাসনকে একটি ঐতিহাসিক পর্যালোচনার কেন্দ্রে দাঁড় করিয়েছে।

বিধ্বস্ত গাজার হাজার হাজার  নারী ও নিষ্পাপ শিশুদের  গণ’হত্যার সুস্পষ্ট ইন্দনদাতা মার্কিন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন  তার  মিত্র দেশ  দ’খ’লদার ব’র্বর অ’ভিশপ্ত ই’হুদী জাতি ইসরায়েলিদের নৃশংস আগ্রাসনের পক্ষে সমর্থন ও অস্ত্র দিয়ে নিরব সমর্থন  জুগিয়েছিল।

জো বাইডেন আমেরিকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দ’খলদার   ই’হুদী   ই’স’রাইলের  প্রতি একচেটিয়া মার্কিন সমর্থন অব্যাহতই থেকেছে।  বাইডেনের ক্ষমতাকালে ইসরায়েলকে প্রায় ১৭.৯ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।  কাতার ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরার তথ্য মতে, বাইডেন প্রশাসন এই অর্থ সহায়তার মাধ্যমে ইসরায়েলের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। (সূত্র: আল জাজিরা, ২০২৪)

২০২৪ সালের নভেম্বরে নি’কৃষ্ট ব’র্বর ই’হুদী জাতি ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনের গাজায় ভূখন্ডে একটি ভয়ংকর নিশংস হামলা চালায় এতে প্রায় ১০,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হন, যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও নিষ্পাপ ক্ষুধার্ত শিশু। হিং’স্র হা’য়না ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ব্যবহৃত বোমার বড় অংশই ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত। দেশটির জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, “এই বোমাগুলোর ব্যবহার প্রমাণ করে যে, যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবে সংঘাতের জ্বালানি সরবরাহ করছে।” (সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস, ২০২৪)

গাজার ভয়াবহ সংকট এবং যুদ্ধবিরতি: দায় কার?

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগে প্রায় ১৫ মাস ধরে ইসরায়েলি আগ্রাসন অব্যাহতভাবে চলেছে। এই সময়ে, গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, “গাজার ৭০% হাসপাতাল কার্যক্ষমতার বাইরে চলে যায়, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি জ্বলন্ত উদাহরণ।” (সূত্র: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ২০২৪)

এদিকে সদ্য ঘোষিত হওয়া এ যুদ্ধবিরতির পেছনে  নব মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপের কথা বলা হচ্ছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোতে। তবে চরম হাস্যকরভাবে  গণহত্যার  প্রধান ইন্ধনদাতা জো বাইডেন প্রশাসনও এ যুদ্ধবিরতির  কৃতিত্ব দাবি করেছে।কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সমালোচকরা বলছেন,  যুদ্ধবিরতির পেছনে বাইডেনের কোনো ইতিবাচক ভূমিকা ছিল না।  বরং, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে সংঘাত দীর্ঘায়িত করেছেন। এবং ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর এমন নিশংস হত্যাকাণ্ডের স্পষ্ট ইন্দনদাতা হিসেবে বুড়ো গর্দব জো বাইডেনের পৃথিবীর ইতিহাস কখনোই ক্ষমা করবে না।

মধ্যপ্রাচ্য নীতি: দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবতা ।

বাইডেন প্রশাসন বারবার দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে কথা বলেছে। ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, বাইডেন প্রশাসন “ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে” ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি স্থায়ী সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে, সেই প্রতিশ্রুতি কখনোই বাস্তবায়িত হয়নি। বরং দ’খলদার ইসরায়েলের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ছিল একেবারে নীরব। (সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট, ২০২৩)

ইসরায়েলি আগ্রাসনের পরিসংখ্যান: নৃশংসতার পরিমাপ

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম দ্যা গার্ডিয়ান পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইসরায়েলি বাহিনী প্রায় ২০,০০০ বোমা হামলা চালিয়েছে, যার বেশিরভাগই গাজা উপত্যকায়। এতে প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হন। (সূত্র: গার্ডিয়ান, ২০২৪)

 

বিশ্বব্যাপী নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক সমালোচনা।

জো বাইডেনের নীতির প্রতি সমালোচনা শুধু আন্তর্জাতিক মহলেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ইমাম ড. ওমর সুলাইমান টুইটারে লিখেছেন, “আপনি (বাইডেন) ইচ্ছা করলেই এই গণহত্যা বন্ধ করতে পারতেন, কিন্তু করেননি। আপনি মানবাধিকারের উত্তরাধিকার রেখে যাচ্ছেন না, বরং গণহত্যার উত্তরাধিকার রেখে যাচ্ছেন।”

এছাড়া, ফিলিস্তিনি অধিকারকর্মী রিফাত আল-আরির বলেছেন, “বাইডেন প্রশাসনের প্রতিটি পদক্ষেপ গণহত্যাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এটি ইতিহাসে কলঙ্কিত অধ্যায় হয়ে থাকবে। জো বাইডেনের শাসনামল মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে ইতিহাসে লিপিবদ্ধ থাকবে। তবে তার নীতির সমালোচনা এবং মধ্যপ্রাচ্যের সংকট নিরসনে তার ব্যর্থতা তাকে একটি বিতর্কিত স্থানে নিয়ে গেছে।

আশা করা যায়, ভবিষ্যৎ মার্কিন প্রশাসন মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি ন্যায়সঙ্গত এবং ভারসাম্যপূর্ণ নীতি গ্রহণ করবে। মানবজাতি অপেক্ষা করছে এমন এক নেতৃত্বের জন্য, যারা মানবতার সেবায় নিজেদের নিবেদন করবে এবং গণহত্যার পথ থেকে সরে আসবে।

তথ্যসূত্রঃ আল জাজিরা,    নিউ ইয়র্ক টাইমস,       দ্যা গার্ডিয়ান,    হিউম্যান রাইটস ওয়াচ,   ওয়াশিংটন পোস্ট)

 

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

Archive Calendar
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত