১৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১৫ই শাবান, ১৪৪৬
সর্বশেষ
বাংলাদেশ থেকে নেপালে রপ্তানি হলো ৩৩৬ মেট্রিক টন আলু
মোদির কাছে ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ: ট্রাম্পের মূর্তিবদ্ধ মন্তব্য, “আমি এটা মোদির হাতে ছেড়ে দেব”
তেঁতুলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
তেঁতুল খেলে রক্ত পানি হয়ে যায়, সত্যিই কি তাই? জানুন এর সত্যতা কতটুকু
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ইলন মাস্কের ভার্চুয়াল বৈঠক: নতুন দিগন্তের ইঙ্গিত?
শবে বরাত উপলক্ষে বায়তুল মোকাররমসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন
আজ পবিত্র শবে বরাত, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের রাত
পুতিন-ট্রাম্প ফোনালাপে ইউক্রেন যুদ্ধের শেষ, শান্তির নতুন আশা!
ইসরায়েলি রোগীদের চিকিৎসা দিতে অস্বীকার, অস্ট্রেলিয়ায় দুই স্বাস্থ্যকর্মী বরখাস্ত

ফলের সঙ্গে লবণ খাওয়া: স্বাদ বৃদ্ধির অভ্যাসে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

আওয়ার টাইমস নিউজ:

লাইফস্টাইল: ফল আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকার একটি অপরিহার্য অংশ। ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার ও প্রাকৃতিক চিনির উৎসমূল হিসেবে ফল আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে কিছু মানুষ ফল খাওয়ার সময় এর উপর লবণ ছিটিয়ে খেতে পছন্দ করেন, যা অনেকের কাছে একটি সাধারণ অভ্যাস হলেও এটি শরীরের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফলের সাথে লবণ খাওয়ার এই অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ফলের সাথে লবণ মেশানোর ফলে শরীরের নানা কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এটি শরীরের পুষ্টির গ্রহণযোগ্যতা কমিয়ে দিতে পারে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করতে পারে এবং আরও অনেক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। চলুন, বিস্তারিতভাবে জানা যাক ফলের সাথে লবণ খাওয়ার ফলে কী কী ক্ষতি হতে পারে।

১. পুষ্টির ঘাটতি: ফলের পুষ্টিগুণ হ্রাস পায়

ফলে প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান থাকে যা শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কিন্তু যখন আপনি ফলের সাথে লবণ মেশান, তখন এর পুষ্টিগুণে কিছুটা পরিবর্তন আসে। বিশেষত, ফলের ভিটামিন সি-এর মাত্রা কমে যায়, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। লবণ অতিরিক্ত ব্যবহার করলে ফলের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণও ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা শরীরের দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতার জন্য বিপজ্জনক।

২. কিডনির উপর প্রভাব: অতিরিক্ত লবণ কিডনির কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়

লবণ ব্যবহারের কারণে শরীরের পানির ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। কিডনি শরীরের অতিরিক্ত লবণ এবং পানি নিষ্কাশন করে, কিন্তু যখন লবণের পরিমাণ বেড়ে যায়, তখন কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। কিডনি যে কাজটি করে, তা যথাযথভাবে করতে ব্যর্থ হলে শরীর ফুলে যেতে পারে, কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে এবং কিডনির নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত লবণের ফলে কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় এবং কিডনির কার্যকারিতা কমে যেতে পারে।

৩. হজমের সমস্যা: লবণ হজম প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করে

ফলে প্রাকৃতিক চিনি থাকে, যা হজম প্রক্রিয়াকে সহায়ক করে। ফলের এই প্রাকৃতিক মিষ্টি খাবারটির হজমে কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে না। কিন্তু লবণ মেশালে এটি হজম প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অনেক সময় ফলের সাথে লবণ খেলে গ্যাস, পেট ফোলাভাব বা অ্যাসিডিটি সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া, লবণ মেশানোর কারণে ফলের স্বাদও নষ্ট হয়ে যায়, এবং এর প্রাকৃতিক মিষ্টিতেও পরিবর্তন আসে, যা খাবারের স্বাদ কমিয়ে দেয়।

৪. হার্টের জন্য ক্ষতিকর: অতিরিক্ত লবণ হার্টের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সব সময় সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে, অতিরিক্ত লবণ খাওয়া হার্টের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। লবণ শরীরের রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়, যা হার্টের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। ফলের সঙ্গে লবণ মেশালে এই ঝুঁকি আরও বাড়ে। বিশেষ করে যারা হার্টের রোগে আক্রান্ত, তাদের জন্য এই অভ্যাস অত্যন্ত বিপজ্জনক। অতিরিক্ত লবণ হার্টের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

৫. রক্তচাপ বৃদ্ধি: লবণ রক্তচাপের জন্য বিশেষ ঝুঁকি

অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার একটি বড় সমস্যা হলো রক্তচাপের বৃদ্ধি। লবণ বেশি পরিমাণে খেলে রক্তচাপের স্তর বেড়ে যায়, যা দীর্ঘমেয়াদে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা সাধারণত উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের লবণ এড়িয়ে চলতে বলেন, কারণ এটি তাদের অবস্থাকে আরও খারাপ করতে পারে। ফলের সঙ্গে লবণ মেশানোর ফলে রক্তচাপ বাড়ার সম্ভাবনা আরও বৃদ্ধি পায়, যা গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

(ফলের সঙ্গে লবণ খাওয়ার অভ্যাস শরীরের জন্য অস্বাস্থ্যকর হতে পারে। এটি কিডনি, হার্ট, রক্তচাপ এবং হজম ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। ফলের প্রকৃত পুষ্টিগুণ বজায় রাখার জন্য প্রাকৃতিকভাবেই ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং অতিরিক্ত লবণ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। সুস্থ থাকতে হলে আমাদের খাদ্যাভ্যাসের প্রতি সচেতন হতে হবে, এবং ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে এর প্রকৃত গুণাগুণ উপভোগ করার জন্য কোনো প্রকার ভেজাল বা অপ্রয়োজনীয় উপাদান ব্যবহার না করাই ভালো।)

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: ফলের প্রকৃত স্বাদ উপভোগ করুন

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ফলের প্রকৃত পুষ্টিগুণ উপভোগ করার জন্য এটি প্রাকৃতিকভাবে খাওয়া উচিত। লবণ ছাড়াই ফল খেলে আপনি এর সকল পুষ্টি উপাদান ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারবেন। যদি আপনি ফলের স্বাদ বৃদ্ধির জন্য কিছু করতে চান, তবে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করুন। ফলের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক চিনি এবং মিষ্টিতা হজম প্রক্রিয়া সুগম করে, তবে লবণ মেশানোর ফলে এটি নষ্ট হয়ে যায় এবং স্বাদও পাল্টে যায়।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

Archive Calendar
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত