
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর এবং জ্বালানি স্থাপনায় ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়ান বাহিনী। এই হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে এবং বহু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শনিবার রাতে থেকে শুরু হয়ে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত চলা এই হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বেশ কয়েকটি প্রধান শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া মোট ১২৩টি ড্রোন ও ৪০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এর মধ্যে ৫৬টি ড্রোন প্রতিহত করা সম্ভব হলেও বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র আবাসিক ভবন এবং জ্বালানি অবকাঠামোতে আঘাত হানে, যার ফলে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে।
পোলতাভা শহরের একটি আবাসিক ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে চারটি শিশু রয়েছে। এ ঘটনায় ১৬ জন আহত হয়েছে, যাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
খারকিভ অঞ্চলে রাশিয়ার ড্রোন হামলায় ৬০ বছর বয়সী এক নারী নিহত হন এবং আরও চারজন আহত হন। একই সঙ্গে সুমি অঞ্চলে একটি পুলিশ টহল দল লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়, এতে তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণ হারান।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে যে, তারা মূলত ইউক্রেনের গ্যাস ও জ্বালানি স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এতে দেশটির বিদ্যুৎ সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে এবং বিভিন্ন অঞ্চলে ব্ল্যাকআউটের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলাকে “সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আরও সামরিক সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “রাশিয়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, আক্রমণকারী ড্রোন এবং বিমান বোমা ব্যবহার করছে। আমাদের প্রতিরক্ষার জন্য আরও উন্নত অস্ত্র ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষই ড্রোন ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। রাশিয়া ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোতে হামলা চালিয়ে তাদের প্রতিরক্ষা দুর্বল করার চেষ্টা করছে, আর ইউক্রেন পাল্টা হামলা চালিয়ে রাশিয়ার অগ্রগতি ঠেকানোর চেষ্টা করছে।
এই হামলার ফলে ইউক্রেনে নতুন করে মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পরিস্থিতির প্রতি গভীর নজর রাখছে এবং যুদ্ধ বন্ধে নতুন উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।