
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: ব্যাংক খাতের লুটপাট রোধে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। যারা এ ধরনের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল (রবিবার) অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে আয়োজিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি বলেন, “ব্যাংক লুটের অর্থ জনগণের সম্পদ, এই অর্থ আত্মসাৎকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না।” বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে অবহিত করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বৈঠকে জানান, ব্যাংক লুটপাটের সঙ্গে জড়িত ১২ জন শীর্ষ অলিগার্ক চিহ্নিত করা হয়েছে। এরই মধ্যে এস আলম গ্রুপের সম্পদ জব্দ করা হয়েছে, পাশাপাশি ‘নগদ’-এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের একটি বিশেষ ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে ১২ জন বড় অর্থলুটকারী শনাক্ত দল ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সফর করেছে, শিগগিরই সুইজারল্যান্ডের একটি দল আসবে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে আলোচনা চলছে, যাতে বিদেশে পাচার হওয়া ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ফেরত আনা যায়।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতি এখন স্থিতিশীল অবস্থানে আছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হতে চলেছে। তিনি জানান, বর্তমানে দেশের রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব, যা সামনের দিনগুলোতে আরও ইতিবাচক হবে।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, দেশের সার্বিক নিরাপত্তা তদারকির জন্য নতুন ‘কমান্ড সেন্টার’ চালু করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই সেন্টার পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, কোস্ট গার্ডসহ বিভিন্ন বাহিনীকে সংযুক্ত করবে।
প্রবাসী আয় ২৩ শতাংশ বেড়েছে বলে বৈঠকে জানানো হয়। তবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এটি উদযাপনের সময় নয়, বরং আরও নতুন শ্রমবাজার তৈরি করতে হবে।” যেসব দেশে বাংলাদেশি কর্মীদের ভিসা বন্ধ রয়েছে, তা পুনরায় চালুর বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত পাঁচ মাসে অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে বলে বৈঠকে জানানো হয়। মূল্যস্ফীতি কমে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে ৭-৮ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যও দীর্ঘদিন পর প্রথমবারের মতো উদ্বৃত্ত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন এবং অর্থনীতির উন্নয়ন ধরে রাখতে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান।