
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি মনোনয়নের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বিশেষত, ২০২৪ সালের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত সামরিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মিশনে অন্তর্ভুক্ত না করার সুপারিশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা।
জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব সামরিক বা পুলিশ সদস্য র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), ডিজিএফআই, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ব্যাটালিয়নের সঙ্গে যুক্ত এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত ছিলেন, তাদের শান্তিরক্ষী মিশনে পাঠানো হবে না।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় ঘটে যাওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশন (OHCHR) একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—
শান্তিরক্ষী মিশনের জন্য নিরীক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা – আন্তর্জাতিক মানবাধিকার, মানবিক আইন বা শরণার্থী আইনের লঙ্ঘন, যৌন হয়রানি বা অন্য কোনো গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে— এমন কাউকে যেন জাতিসংঘ শান্তি মিশনে পাঠানো না হয়, তা নিশ্চিত করতে একটি স্বাধীন ও কার্যকর স্ক্রিনিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা – পুলিশ, গোয়েন্দা, বিজিবি, আনসার ভিডিপি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে যেসব কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মানবাধিকার লঙ্ঘন বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তাদের যাচাই-বাছাই করে পদ থেকে অপসারণের সুপারিশ করা হয়েছে।
সীমিত সময়ে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব নির্ধারণ – বিশেষ পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীকে সীমিত সময়ের জন্য অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি আইন করে নির্ধারণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, এই সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশ যত দ্রুত সম্ভব পাস করা উচিত।
আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা – আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর নিয়োগ ও কার্যক্রমের স্বচ্ছতা বাড়ানোর বিষয়টিও প্রতিবেদনে গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের এই সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ থেকে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সদস্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে আরও কঠোর যাচাই-বাছাই করা হবে। পাশাপাশি, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর কর্মকাণ্ড আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করতে হবে।
বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। যদি জাতিসংঘের সুপারিশ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি আরও উন্নত হবে এবং শান্তিরক্ষী মিশনে অংশগ্রহণের সুযোগ অক্ষুণ্ণ থাকবে।