১৮ই এপ্রিল, ২০২৫, ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৬
সর্বশেষ
ভারতীয় আ/গ্রাসনকে ছুড়ে ফেলে পাকিস্তানের সাথে গভীর কূটনীতিক সম্পর্কে এগোচ্ছে বাংলাদেশ
রাজনীতিতে আসা ভুল ছিল না, নির্বাচন করলে আবার জিতব বললেন সাকিব” সাকিবকে রক্ত খেকোর অনুসারী আখ্যা দিয়ে সমালোচনার ঝড়
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮ আহত ১০২, বেজে উঠছে যুদ্ধের ধামামা!
ভারতকে মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধে ও তাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর বার্তা দিলেন ডক্টর. মুহাম্মদ ইউনূস সরকার
জুলাই বিপ্লবে ছাত্র হত্যা মামলার আসামি আওয়ামী নেতা শাহে আলম মুরাদ পুলিশের জালে আটক!
বুড়া মানুষ গুলি খাইছে, মরলে সমস্যা নেই’ আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত বৃদ্ধাকে দেখে ডাক্তারের নিষ্ঠুর আচরণে লজ্জিত সমগ্র জাতি
বেনাপোল দিয়ে ভারতীয় চাল আমদানি বন্ধ করলো ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকার
মার্চ ফর গাজা’র হুংকারে বাংলাদেশি পাসপোর্টে হা/য়/না ই’স’রা’ইল নিষিদ্ধ, প্রশংসায় ভাসছেন ড. ইউনূস সরকার
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের গভীর রহস্য খুঁজে বের করতেই হবেঃ প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের দৃঢ় ঘোষণা
পেরেশানি ও দুশ্চিন্তা দূর করতে চান? এই আমল গুলো আপনার হৃদয়ে এনে দেবে প্রশান্তির পরশ

শবে বরাত: আল্লাহর অশেষ রহমত ও ক্ষমা লাভের বিশেষ রাত

আওয়ার টাইমস নিউজ।

ইসলামী ডেস্ক: শবে বরাত (لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَان) অর্থাৎ শাবান মাসের মধ্যরাত ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত, যা রহমত, মাগফিরাত (ক্ষমা) ও মুক্তির জন্য বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। এই রাতকে নিয়ে অনেক ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত থাকলেও, কোরআন ও সহিহ হাদিসে এটি মূলত তওবা, ইবাদত ও আল্লাহর ক্ষমা লাভের রাত হিসেবে বর্ণিত হয়েছে।

শবে বরাত সম্পর্কে কোরআনের আলোকে বিশ্লেষণ:
কোরআনে সরাসরি “শবে বরাত” শব্দটি উল্লেখ নেই, তবে কিছু তাফসিরকারক সুরা আদ-দুখানের নিম্নলিখিত আয়াতকে এ রাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছেন—

সুরা আদ-দুখান, আয়াত ৩-৪

إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُبَارَكَةٍ ۚ إِنَّا كُنَّا مُنْذِرِينَ (٣) فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ (٤)

অর্থ:
“নিশ্চয়ই আমি এক বরকতময় রাতে এই কিতাব (কোরআন) নাজিল করেছি। নিশ্চয়ই আমরা সতর্ককারী। এই রাতে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থির করা হয়।”
(সুরা আদ-দুখান: ৩-৪)

তাফসির বিশ্লেষণ: অধিকাংশ তাফসিরবিদের মতে, এখানে “বরকতময় রাত” বলতে লাইলাতুল কদর বোঝানো হয়েছে, শবে বরাত নয়। কারণ কোরআন রমজানের লাইলাতুল কদরে অবতীর্ণ হয়েছে, যা স্পষ্টভাবে সুরা আল-কদর (৯৭:১)-এ উল্লেখ আছে।

শবে বরাত সম্পর্কে প্রমাণিত সহিহ হাদিস:

শবে বরাতের রাত সম্পর্কে কিছু সহিহ ও হাসান (বিশ্বাসযোগ্য) হাদিস পাওয়া যায়, যেখানে এই রাতের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো আল্লাহর দয়া ও ক্ষমা।

১. আল্লাহ এ রাতে বান্দাদের ক্ষমা করেন

عَنْ أَبِي مُوسَى ٱلْأَشْعَرِيِّ، عَنِ ٱلنَّبِيِّ ﷺ قَالَ: إِنَّ اللَّهَ لَيَطَّلِعُ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، فَيَغْفِرُ لِجَمِيعِ خَلْقِهِ، إِلَّا لِمُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ

অর্থ:
“আবু মুসা আশ’আরী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন: আল্লাহ শাবান মাসের মধ্যরাতে (শবে বরাতে) তাঁর সৃষ্টিজগতের প্রতি দৃষ্টি দেন এবং সকলকে ক্ষমা করে দেন, তবে মুশরিক (যে আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করে) ও বিদ্বেষপোষণকারী ব্যক্তি ছাড়া। (ইবনে মাজাহ: ১৩৯০, সহিহ হাদিস)

এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, শবে বরাতের মূল গুরুত্ব হলো
*আল্লাহর ক্ষমা লাভ করা
*শিরক ও বিদ্বেষ থেকে মুক্ত হওয়া
*তওবা ও ইবাদতের মাধ্যমে নৈকট্য অর্জন

২. এ রাতে আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: قَالَ النَّبِيُّ ﷺ: يَنْزِلُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَىٰ إِلَىٰ سَمَاءِ ٱلدُّنْيَا لَيْلَةَ ٱلنِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، فَيَغْفِرُ لِأَكْثَرَ مِنْ عَدَدِ شَعْرِ غَنَمِ بَنِي كَلْبٍ

অর্থ:
“আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন: শবে বরাতের রাতে আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন এবং বনু কালব গোত্রের ভেড়ার পশমের সংখ্যা থেকেও অধিক সংখ্যক মানুষকে ক্ষমা করে দেন।”
(তিরমিজি: ৭৩৯, হাসান হাদিস)

এই হাদিস থেকে স্পষ্ট হয় যে, এ রাতে আল্লাহর দয়া ও ক্ষমার দরজা উন্মুক্ত থাকে।

শবে বরাতে করণীয় আমল (ইবাদত ও দোয়া)

১.নফল নামাজ: এই রাতে একাকী নফল নামাজ পড়া উত্তম। তবে নির্দিষ্ট কোনো রাকাত নেই।
২.কোরআন তিলাওয়াত: কোরআন অধ্যয়ন করা উত্তম ইবাদত।
৩.তওবা ও ইস্তেগফার: আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা জরুরি।
৪.জিকির ও দোয়া: দোয়া করা এবং আল্লাহর স্মরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৫.সদকা ও দান: দান-সদকা করা আল্লাহর রহমত লাভের অন্যতম উপায়।

শবে বরাত সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারণা পরিহার করুন:

১. শবে বরাতের নির্দিষ্ট কোনো নামাজ নেই – ১০০ রাকাত বা ১৪ রাকাত নামাজের কথা কোনো সহিহ হাদিসে পাওয়া যায় না।
২. আতশবাজি ও আনন্দ উৎসব শরিয়তসম্মত নয় – ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই।
৩. মৃতদের আত্মা ঘরে ফিরে আসে—এমন বিশ্বাস ভুল – ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই।
৪. এই রাতে বিশেষ কোনো খাবার খাওয়া বা বিতরণ করা জরুরি নয় – এটি বিদআত।

শবে বরাত রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের রাত, যেখানে আল্লাহ বান্দাদের ক্ষমা করেন। তবে ভুল ধারণা ও বিদআত থেকে বিরত থাকা জরুরি।

আমাদের উচিত:
* সহিহ হাদিস অনুযায়ী ইবাদত করা
* আল্লাহর কাছে তওবা ও দোয়া করা
* বিদআত ও ভিত্তিহীন আমল পরিহার করা

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে শবে বরাতের বরকতপূর্ণ ইবাদত করার তওফিক দান করুন! আমিন।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

ফেসবুক পেজ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

Archive Calendar
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০  

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত