আওয়ার টাইমস নিউজ।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর)-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে, এতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলা হওয়ায় আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল বাংলাদেশ পরিদর্শন শেষে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, রাজনৈতিক দমন-পীড়ন, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে।
প্রতিবেদন প্রকাশের পর আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি তুলেছে কিছু সংগঠন, বিশেষ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। তারা বলছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী এবং রাজনৈতিক পুনর্বাসনের সুযোগ নেই।
জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন বলেন, "জাতিসংঘের প্রতিবেদনে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শেখ হাসিনার সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত। তাই শুধু দল নিষিদ্ধ করাই নয়, জড়িতদের বিচারের আওতায় আনাও জরুরি।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স মনে করেন, এখনই আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে চূড়ান্ত কিছু বলা কঠিন। তবে তিনি বলেন, "গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত থাকলে দলটির ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, "জাতিসংঘের প্রতিবেদনের পর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফেরার নৈতিক অধিকার নেই। আন্তর্জাতিকভাবে তারা আরও চাপে পড়বে।
প্রতিবেদনের পাশাপাশি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে, যার কয়েকটি ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।
সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, "আওয়ামী লীগ যদি নতুন নেতৃত্ব গঠন করে এবং পুরনো ভুলগুলো সংশোধন করতে পারে, তাহলে দলটি টিকে থাকতে পারে। তবে শেখ হাসিনাকে ধরে রাখলে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হবে।
জাতিসংঘ সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের সুপারিশ করেনি। তবে তারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ এখন নির্ভর করছে দলের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত এবং আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার ওপর। দলটি যদি সাংগঠনিক পরিবর্তন আনে, তাহলে তারা আবারও রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হতে পারে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি তাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে।