আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পেছনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ভূমিকার জন্য তীব্র সমালোচনা করেছেন। ট্রাম্প বলেন, "আপনি যদি এই যুদ্ধ না শুরু করতেন, তাহলে এত বিপর্যয় তৈরি হত না।" তার মতে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উচিত ছিল চুক্তি করার মাধ্যমে শান্তির পথে এগোনো, যা তারা এতোদিন করেননি।
ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসোর্টে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, তিনি খুব সহজেই এই যুদ্ধ শেষ করতে পারতেন। তিনি বলেন, “যুদ্ধ শেষ করার ক্ষমতা আমার আছে এবং আমি বিশ্বাস করি, পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় আলোচনার সুযোগ রয়েছে।” তবে, তিনি ইউক্রেনের নেতাদের অভিযুক্ত করেছেন যে তারা এই যুদ্ধের তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে, যার কারণে পরিস্থিতি বর্তমানে এতটা জটিল হয়ে পড়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তাদের মধ্যে গত সপ্তাহে রিয়াদে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে এই যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে ইউক্রেনের প্রতিনিধি মঞ্চে উপস্থিত ছিল না, যা নিয়ে জেলেনস্কি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের বাদ দিয়ে কোনো শান্তিচুক্তি হলে, তা ইউক্রেনের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে না।
ট্রাম্প তার মন্তব্যে আরও বলেন, "আপনার কাছে তিন বছর ছিল যুদ্ধটা থামানোর জন্য, কিন্তু আপনি কিছুই করেননি। এখন যখন আপনি নিজে যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে আলোচনা করতে চাচ্ছেন, তখন কেন এত সময় নষ্ট করলেন? ট্রাম্পের মতে, যুদ্ধের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য আরও অনেক আগেই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল। তিনি বিশ্বাস করেন, শিগগিরই যুদ্ধ শেষ করা সম্ভব, যদি সঠিক নেতৃত্ব এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজা যায়।
এছাড়াও, ট্রাম্প ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অভিযোগ করেন যে, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে কমে গেছে। যদিও একাধিক জরিপে দেখা গেছে, ইউক্রেনের জনগণের অধিকাংশই এখনও তাদের প্রেসিডেন্টের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে, ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা ৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
রাশিয়া ইউক্রেনের নির্বাচনে শর্ত রেখেছে এবং নির্বাচন আয়োজনের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। ট্রাম্প একদিকে রাশিয়ার এই আহ্বানকে গুরুত্ব দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, তবে অন্যদিকে তিনি দাবি করেছেন, “জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা কমে আসায় তার নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ এখন অস্বচ্ছ।”
ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নেতারা, বিশেষত যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স, ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর বিষয়ে একে অপরের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউক্রেনের নিরাপত্তা জোরদার করতে সেনা পাঠানোর কথা বললেও, জার্মানি এবং পোল্যান্ড এই পরিকল্পনা পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে। ট্রাম্প অবশ্য স্পষ্ট জানিয়েছেন, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপে সেনা পাঠানোর প্রস্তাবের সমর্থন করেন, তবে যুক্তরাষ্ট্র এর অংশ হবে না।
এদিকে, ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে সংকট নিরসনের জন্য নতুন আলোচনা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফ্রান্স এবং অন্যান্য দেশ আবারো আলোচনা করতে চায়, তবে তারা যুদ্ধের পরবর্তী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে।