আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: এখেজুর, যা মূলত উপমহাদেশে খুব জনপ্রিয় একটি ফল, তার পুষ্টিগুণের জন্য সবার পরিচিত। এটি শুধু একটি সুস্বাদু খাবার নয়, বরং শারীরিক সুস্থতার জন্যও বেশ উপকারী। বিশেষ করে রমজান মাসে ইফতারে খেজুরের ব্যবহার অত্যন্ত সাধারণ। এতে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ উপাদান, এবং শক্তি যা শরীরকে সতেজ ও শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে। খেজুরের প্রতিটি অংশই পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ, এবং এটি শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
খেজুরের পুষ্টিগুণ
১. শক্তির উৎস খেজুরে রয়েছে উচ্চমাত্রার প্রাকৃতিক শর্করা, যা শরীরকে দ্রুত শক্তি প্রদান করে। এতে রয়েছে গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ, এবং সুক্রোজ, যা তাড়াতাড়ি শরীরে শক্তি সরবরাহ করে। রমজান মাসে উপোস শেষে ইফতারে খেজুর খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী, কারণ এটি দ্রুত শক্তি ফিরিয়ে আনে।
২. ভিটামিনের সমৃদ্ধ উৎস খেজুরে রয়েছে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, এবং ভিটামিন এ, যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। ভিটামিন বি শরীরের শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে, এবং ভিটামিন সি ত্বক ও স্নায়ু স্বাস্থ্য রক্ষা করে। ভিটামিন এ চোখের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক।
৩. খনিজ উপাদানের সমৃদ্ধ উৎস খেজুরে অনেক প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান রয়েছে, যেমন পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, এবং ক্যালসিয়াম। পটাসিয়াম হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ ঠিক রাখতে সহায়ক। ম্যাগনেসিয়াম মাংসপেশি এবং স্নায়ুর স্বাস্থ্য বজায় রাখে, আর ক্যালসিয়াম হাড় শক্ত করতে সহায়ক।
৪. ফাইবার এবং হজম সহায়ক খেজুরে প্রচুর ফাইবার রয়েছে যা হজম ব্যবস্থাকে উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক এবং পাচনতন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখে। নিয়মিত খেজুর খাওয়া হজমের সমস্যাগুলি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৫. এন্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ খেজুরে পাওয়া যায় নানা ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা শরীরের কোষগুলোকে সুরক্ষা প্রদান করে। এতে থাকা ফেনলিক যৌগসমূহ শরীরের প্রদাহ কমাতে সহায়ক, যা বিভিন্ন প্রকার প্রদাহজনিত রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।
খেজুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা
হৃদরোগ প্রতিরোধ: খেজুরে থাকা পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম হৃৎপিণ্ডের কার্যক্রম উন্নত করতে সহায়ক এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
অ্যানিমিয়া নিরাময়: খেজুরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে, যা রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া দূর করতে সহায়ক। এটি রক্তস্বল্পতার সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের জন্য উপকারী।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: খেজুরে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, বিশেষ করে শীতকালে নানা ধরনের ভাইরাস ও সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সহায়ক।
ওজন কমানোর সহায়ক: খেজুরে থাকা ফাইবার শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে, যা অনেক সময় অতিরিক্ত খাওয়া কমাতে সহায়ক। এটি ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং পেট ভরা অনুভূতি প্রদান করে।
খেজুর শুধু একটি সুস্বাদু খাবারই নয়, এটি একটি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর ফল যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপাদান পূর্ণ করে। এটি শক্তি, ভিটামিন, খনিজ, এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ, যা শরীরকে শক্তিশালী এবং সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তবে, এটি অত্যধিক পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়, কারণ এতে শর্করা এবং ক্যালোরি রয়েছে। একটি ব্যালেন্সড ডায়েটে খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যকর এবং কার্যকর হতে পারে।