
আওয়ার টাইমস নিউজ।
স্বাস্থ্য: গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসার হলো পাকস্থলীতে বা ক্ষুদ্রান্ত্রে এক ধরনের ক্ষত বা ঘা সৃষ্টি হওয়া, যা খাদ্য হজমে সমস্যা তৈরি করে। এটি দুটি প্রধান প্রকারে বিভক্ত: গ্যাস্ট্রিক আলসার (পাকস্থলীতে) এবং ডিওডেনাল আলসার (ক্ষুদ্রান্ত্রে)। সাধারণভাবে, পেপটিক আলসার বলতে পাকস্থলী বা ক্ষুদ্রান্ত্রের ক্ষত বোঝানো হয়।
গ্যাস্ট্রিক আলসারের প্রধান কারণ হলো হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি নামক এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া, যা সাধারণত দূষিত খাবার বা পানির মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। এটি পাকস্থলীতে প্রবেশ করে মিউকাস মেমব্রেনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যার ফলে আলসার তৈরি হয়।
এছাড়া, দীর্ঘ সময় ধরে ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণ, মানসিক চাপ, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, তেল-চর্বিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ, ধূমপান ও মদ্যপানও গ্যাস্ট্রিক আলসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
গ্যাস্ট্রিক আলসারের প্রধান উপসর্গগুলো হলো:
পেটে জ্বালাপোড়া এবং তীব্র ব্যথা
বুকে ব্যথা এবং জ্বালা
বমি ভাব বা বমি, কখনো রক্তসহ
মল বা পায়খানায় রক্তপাত এবং মলের রং কালো বা খয়েরি হওয়া
পেট ফোলা বা অস্বস্তি অনুভূতি
গ্যাস্ট্রিক আলসারের নির্ণয়:
গ্যাস্ট্রিক আলসার নির্ণয় করার জন্য সবচেয়ে কার্যকর পরীক্ষা হলো এন্ডোস্কোপি, যেখানে পাকস্থলীর ভেতরকার অবস্থা দেখা হয়। অন্য পরীক্ষাগুলোর মধ্যে ইউরিয়া শ্বাস পরীক্ষা, রক্তের অ্যান্টিবডি পরীক্ষা এবং স্টুল অ্যান্টিজেন পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত।
গ্যাস্ট্রিক আলসারের জটিলতা:
গ্যাস্ট্রিক আলসারের কারণে বিভিন্ন জটিলতা হতে পারে, যেমন:
অন্ত্রে রক্তক্ষরণ
রক্তশূন্যতা
খাদ্যনালিতে ছিদ্র হওয়া
পাকস্থলী বা ক্ষুদ্রান্ত্রের সংকোচন
ক্যানসারের সম্ভাবনা
গ্যাস্ট্রিক আলসারের প্রতিরোধের উপায়:
গ্যাস্ট্রিক আলসারের চিকিৎসা শুরু করার আগে, এর কারণ চিহ্নিত করা জরুরি। যদি এটি ব্যথানাশক ওষুধের কারণে হয়ে থাকে, তবে সেই ওষুধ বন্ধ করতে হবে। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়, এবং অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণকারী ওষুধও কার্যকর হতে পারে।
সুস্থ জীবনযাপন, সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং মানসিক চাপ কমানোর মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিক আলসার প্রতিরোধ করা সম্ভব।