
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সচেতন ছিল, কিন্তু ভূমিকা নেয়নি।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও গণবিক্ষোভ সম্পর্কে ভারত অবগত ছিল, তবে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করেনি। শনিবার (২২ মার্চ) এক আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
ভারতের পররাষ্ট্রবিষয়ক পরামর্শক কমিটির এক বৈঠকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। জয়শঙ্কর বলেন, ভারত শুরু থেকেই জানত যে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের দিকে যাচ্ছে এবং জনগণের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল। তবে ভারতীয় নীতির কারণে তারা সরাসরি কোনো ভূমিকা নেয়নি।
তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্কের সাম্প্রতিক বক্তব্যেরও উল্লেখ করেন, যেখানে বলা হয়েছিল, যদি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়, তাহলে তাদের জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে নিষিদ্ধ করা হতে পারে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে আলোচনা শুরু করলেও, শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ায় দুই দেশের সম্পর্কে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রকে ঢাকায় পাঠানো হয়, যাতে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়া যায়।
এদিকে, থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে বৈঠক হবে কিনা, সে বিষয়ে এখনো ভারত আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।
জয়শঙ্কর বাংলাদেশ পরিস্থিতির পেছনে ‘বহিরাগত শক্তির’ ভূমিকা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। তবে তিনি চীনকে কোনো শত্রু হিসেবে নয়, বরং প্রতিযোগী হিসেবে দেখেন বলে জানান।
ভারত ২০১৬ সালে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য ১৯তম সার্ক সম্মেলনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, বিশেষ করে উরি হামলার ঘটনার পর। এরপর থেকে ভারত বিমসটেককে বেশি গুরুত্ব দিয়ে আসছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক)-এর ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
মোটকথা, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ভারতের ভূমিকা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেয়, তা সময়ই বলে দেবে।