
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৬ জন নিরীহ পর্যটক। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দুইজন বিদেশি নাগরিক এবং কর্ণাটকের এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী, যাকে তার স্ত্রী ও সন্তানের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আরও ১২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটার দিকে এ হামলাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, সেনাবাহিনীর পোশাকে ছদ্মবেশধারী হামলাকারীরা হঠাৎই পর্যটকদের ওপর গুলি চালায়। ঘটনাটি ঘটে পেহেলগামের বাইসারান উপত্যকার চারণভূমিতে, যেখানে পায়ে হেঁটে বা ঘোড়ায় চড়ে পৌঁছাতে হয়। এলাকাটি সাধারণত শান্তিপূর্ণ এবং বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খুব কাছ থেকে চালানো গুলিতে লোকজন আতঙ্কে ছুটোছুটি শুরু করেন। মহিলারা যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন, আর আহতদের সাহায্যে স্থানীয়রা ঝাঁপিয়ে পড়েন। মুহূর্তেই ভ্রমণ আনন্দ বদলে যায় মৃত্যুর বিভীষিকায়।
এই হামলার পেছনে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। কারণ ঘটনাটি ঘটেছে এমন সময়, যখন কাশ্মীরের পর্যটন মৌসুম তুঙ্গে। আর ঠিক এই সময়েই ভারতের বিখ্যাত ‘আমারনাথ যাত্রা’র প্রস্তুতি চলছে। আগামী ৩ জুলাই শুরু হতে যাওয়া ৩৮ দিনব্যাপী এই তীর্থযাত্রার একটি মূল রুটই পেহেলগাম।
হামলার পরপরই ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জরুরি বৈঠক ডাকেন। তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন এবং শ্রীনগরে পৌঁছে নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা ও প্রশাসনের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা পর্যালোচনা করবেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক বিবৃতিতে এই নির্মম হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় ভারতের অবস্থান অটল ও আরও কঠোর হবে।”
এই হামলা কেবল নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা নয়, বরং জম্মু-কাশ্মীর অঞ্চলে শান্তির চেহারার পেছনে লুকিয়ে থাকা গভীর সংকটেরও বহিঃপ্রকাশ।