আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম ধারাবাহিকভাবে কমলেও বাংলাদেশের বাজারে সেই প্রভাব খুব একটা পড়ছে না। ফলে অনেক ক্রেতাই হতাশ হচ্ছেন, কারণ বিশ্বজুড়ে দাম কমার খবর শোনার পরও দেশে স্বর্ণ কিনতে গিয়ে উচ্চ মূল্যের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর পেছনে রয়েছে বেশ কিছু কাঠামোগত ও নীতিগত কারণ।
১. উচ্চ শুল্ক ও আমদানির জটিলতা বড় কারণ:
বাংলাদেশে স্বর্ণ আমদানিতে সরকারের নির্ধারিত শুল্ক হার অনেক বেশি। প্রতি ভরিতে প্রায় ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত শুল্ক দিতে হয়। এতে বৈধপথে আমদানির পরিমাণ কমে যায় এবং বাজারে নতুন স্বর্ণের সরবরাহ সংকুচিত থাকে। ফলে আন্তর্জাতিক দাম কমলেও দেশের বাজারে তা কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না।
২. টাকার অবমূল্যায়ন এবং ডলার সংকট:
গত কয়েক বছরে ডলারের তুলনায় টাকার মান উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও দেশে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। ডলারে কেনা স্বর্ণ দেশে টাকায় রূপান্তর করলে দাম তুলনামূলক বেশি পড়ে, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে ভোক্তাদের ওপর।
৩. বাজার নির্ধারণে স্বচ্ছতার অভাব:
বাংলাদেশের স্বর্ণ বাজার এখনো কিছু বড় ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। বাজারের প্রকৃত চাহিদা-জোগান বিবেচনায় না এনে মাঝে মাঝেই নিজেদের সুবিধামতো দাম নির্ধারণ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারের পরিবর্তনের যথাযথ প্রতিফলন দেশীয় বাজারে পড়ে না।
৪. বিক্রির হার কমলেও দামে পরিবর্তন নেই:
পরিসংখ্যান বলছে, দেশে স্বর্ণের বিক্রি আগের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ কমে গেছে। বিক্রি কমলেও বিক্রেতারা দাম কমাতে অনাগ্রহী। তাদের দাবি, ক্রয়ের খরচ এবং বাজারের ঝুঁকি বিবেচনায় দাম কমানো সম্ভব হচ্ছে না।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, স্বর্ণের বাজারে স্বচ্ছতা আনতে হবে এবং আমদানি শুল্ক যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে। তা না হলে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে দেশের বাজারের এই অসামঞ্জস্য ক্রমেই আরও বাড়বে, এবং সাধারণ ক্রেতারা ক্ষতির মুখে পড়তে থাকবে।