
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশের আলোচিত লেখক, অ্যাক্টিভিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিনাকী ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, কেন তিনি আক্রমণাত্মক ভাষায় কথা বলেন এবং কীভাবে একসময় দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। চ্যানেল আই-এর ‘স্ট্রেট কাট’ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, “আমি তো আর মারতে পারি না, তাই গালি দিই।” তার ভাষ্য অনুযায়ী, দেশের ভয়াবহ দুর্দশার জন্য দায়ী শিক্ষিত এলিট শ্রেণি—যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে। তিনি বলেন, “যারা গার্মেন্টসে কাজ করে, মাঠে-ঘাটে খেটে খায়, তারাই দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রেখেছে। আর এই শ্রমজীবী মানুষের উৎপাদিত সম্পদ চুরি করে বিদেশে নিয়ে যায় এলিটরা।”
তিনি আরও বলেন, এই শ্রেণির তিনটি ভয়—সম্মান হারানোর ভয়, মার খাওয়ার ভয় এবং সম্পদ হারানোর ভয়। তাই তিনি তাদের উদ্দেশে কঠোর ভাষায় প্রতিবাদ জানান, যাতে অন্তত সম্মান হারানোর ভয়ে তারা সতর্ক থাকে।
অনুষ্ঠানে পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় ডিজিএফআই তাকে তলব করে। প্রথমে ভদ্রভাবে ডাকা হলেও পরবর্তী কলে রূঢ়ভাবে বলা হয়, সেদিন সন্ধ্যার মধ্যেই তাকে ডিজিএফআই অফিসে হাজির হতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে মানবাধিকারকর্মীদের পরামর্শে তিনি আত্মগোপনে যান এবং পাঁচ মাস ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে থাকেন। পরে নির্বাচন শেষ হলে বাসার সামনে সার্বক্ষণিক নজরদারি এবং ডিজিএফআই সদস্যদের উপস্থিতি দেখে তিনি দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
তার ভাষায়, “যাদের ডিজিএফআই ধরে নিয়ে যায়, তারা অধিকাংশই আর ফেরে না। আমি তখন গুম হওয়া ব্যক্তিদের ডকুমেন্টেশন করছিলাম এবং দেখেছি, কিভাবে অনেককে গুম করে ফেলা হয়। আমিও ভাবলাম, আমার সাথেও হয়তো সেটাই হতে যাচ্ছে।”
ফ্রান্সে আশ্রয়ের বিষয়ে তিনি জানান, তখন তিনি একটি ফরাসি মানবাধিকার সংস্থার সঙ্গে কাজ করতেন। তারাই ভিসা ও আশ্রয়ের যাবতীয় সহায়তা করে।
পিনাকীর বক্তব্যে স্পষ্ট, তিনি গালি দেন প্রতিবাদ জানাতে, ক্ষমতাবানদের মুখোশ খুলে দিতে—যাতে অন্তত ভয় পেয়ে তারা নিজেদের আচরণ সংশোধন করে।