
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে আজ বুধবার ভারতের সর্বত্র যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মহড়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্দেশনায় দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এই মহড়া আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষকে হঠাৎ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কী করণীয়—তা শেখানো হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২৪৪টি বেসামরিক প্রতিরক্ষা জেলার শহর ও গ্রামে একইসঙ্গে বিমান হামলার সাইরেন, কন্ট্রোল রুমের প্রস্তুতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং ‘ব্ল্যাকআউট’-এর মহড়া হবে। এ ছাড়া আগুন নেভানো, উদ্ধারকাজ, সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার কৌশলও পরীক্ষা করা হবে।
মহড়ায় অংশ নিচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা, স্বেচ্ছাসেবক, হোমগার্ড, এনসিসি সদস্য ও শিক্ষার্থীরা। বিশ্লেষক দীপাঞ্জন চক্রবর্তীর মতে, এই মহড়া শুধু প্রস্তুতির অংশ নয়, বরং এটি পাকিস্তানের ওপর কৌশলগত চাপ তৈরি করতেও ব্যবহৃত হচ্ছে।
এদিকে মঙ্গলবার থেকেই বিভিন্ন রাজ্যে মহড়ার কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। ভারতের ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালের যুদ্ধকালীন ‘ব্ল্যাকআউট’ এবং সাইরেন বাজানোর স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে এই উদ্যোগ।
পাকিস্তানের পাল্টা প্রতিক্রিয়া:
ভারতের সম্ভাব্য হামলা নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ভারত যেকোনো সময় কাশ্মীর সীমান্তে সামরিক আক্রমণ চালাতে পারে। একইসঙ্গে পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো ভারতের ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’ স্থগিত করাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ আখ্যায়িত করে তীব্র প্রতিবাদ জানান।
তিনি ভারতের বিরুদ্ধে ‘জল-সন্ত্রাস’ ও বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদ ছড়ানোর অভিযোগও তুলেছেন। এমনকি ভারতের কার্যক্রম শ্রীলঙ্কা ও কানাডা পর্যন্ত প্রভাব ফেলেছে বলে দাবি করেন বিলাওয়াল।
জাতিসংঘের উদ্বেগ ও সংলাপের আহ্বান;
সাম্প্রতিক উত্তেজনা এবং পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যকার সংঘর্ষ এড়াতে কূটনৈতিক সমাধানের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। সোমবার নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পাকিস্তানের অনুরোধে বিষয়টি আলোচনায় আসে।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে গোয়েন্দা তথ্য উপস্থাপন করে জানানো হয়, ভারতের পক্ষ থেকে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সভায় সদস্যরা দুই দেশকে সংলাপে বসে শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছাতে আহ্বান জানান।
তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে উপমহাদেশে নতুন করে যুদ্ধের শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বিশ্ববাসী এখন তাকিয়ে—সংলাপে সুরাহা হবে, নাকি সংঘর্ষ আরও ঘনীভূত হবে!