
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ইসলামী ডেস্ক: নামাজ প্রতিটি মুসলিমের ওপর ফরজ (বাধ্যতামূলক)। এটি কেবল পরকালের নাজাতের জন্য নয়, দুনিয়ার জীবনকেও সুন্দর, শান্তিপূর্ণ এবং বরকতময় করে। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন:
﴾إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَىٰ عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ﴿
(সুরা আনকাবুত, আয়াত: ৪৫)
অর্থ: নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।
নামাজ একজন মুসলিমকে নৈতিকতা, মনোবল ও সামাজিক সম্মানের পথে পরিচালিত করে। কিন্তু যারা নামাজ ত্যাগ করে, তাদের জন্য দুনিয়ায় নানা ধরনের কষ্ট ও শাস্তির দ্বার খোলা থাকে। হাদিস ও কোরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী, নামাজ না পড়ার ফলে একজন মুসলিম দুনিয়ায় নিম্নলিখিত সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হতে পারে:
১. সৃষ্টির বরকত থেকে বঞ্চিত হওয়া:
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
«مَنْ فَوَّتَ صَلَاةَ الْعَصْرِ كَأَنَّمَا هَدَمَ أَهْلَهُ وَمَالَهُ»
অর্থ: যে ব্যক্তি আসরের নামাজ কাজা করে, তার পরিবার ও ধন-সম্পদ যেন ধ্বংস হয়ে গেছে।
২. চেহারায় নূরের অভাব:
নামাজ ত্যাগকারী ব্যক্তির চেহারায় কোনো নূর বা উজ্জ্বলতা থাকে না।
৩. ভালো কাজের পুরস্কার হারানো:
নামাজ না পড়লে দুনিয়ায় করা অন্য সৎকর্মও আল্লাহর কাছে পূর্ণ স্বীকৃতি পায় না।
৪. দোয়া কার্যকর না হওয়া:
নামাজ ত্যাগকারীর জন্য অন্য লোকের করা দোয়াও কার্যকর হয় না।
৫. সৃষ্টিজীবের ঘৃণা ও অপ্রিয়তা:
নামাজ না পড়লে আল্লাহর সন্তুষ্টি হারানো ছাড়াও, অন্য মানুষ ও সৃষ্টিজীবের কাছে অপ্রিয় হয়ে যায়।
৬. ইসলামের শান্তি থেকে বঞ্চিত হওয়া:
নিয়মিত নামাজ না পড়লে, জীবন ও মন অশান্তি ও হতাশায় ভরা হয়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
«الصَّلَاةُ مَيِّزَةٌ بَيْنَ الْمُؤْمِنِ وَالْكَافِرِ»
অর্থ: নামাজ ঈমানদার ও কাফেরের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করে।
এছাড়া, তিনি আরও বলেছেন যে যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ত্যাগ করে, সে কুফরি অবস্থার দিকে এগিয়েছে। (তিরমিজি: ২৬২০, আবু দাউদ: ৪৬৭৮)
হাদিসে এসেছে, নিয়মিত পাঁচওয়াক্ত নামাজ যথাযথভাবে আদায় করলে তা কেয়ামতের দিনে আলো হিসেবে তার পথ প্রদর্শন করবে এবং তার ঈমান ও নাজাতের নিশ্চয়তা বহন করবে।
নামাজ শুধুমাত্র ইবাদত নয়, এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বরকত ও শান্তি আনে। দিনে মাত্র এক ঘণ্টা, যেটি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে ব্যয় হয়, সে তুলনায় আমরা দুনিয়ার জীবন ও পরকাল উভয়েই কত বড় উপকার পাই। তাই আল্লাহ আমাদের সবাইকে নামাজের গুরুত্ব বোঝার এবং তা নিয়মিত আদায় করার তাওফিক দান করুন।