
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত ইসলামের অন্যতম পবিত্র স্থান আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে আবারও হামলা চালিয়েছে অবৈধ ইসরায়েলি বসতকারীরা। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) শতাধিক বসতকারী দলে দলে মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। সেখানে তারা নিহত মার্কিন ডানপন্থি কর্মী চার্লি কার্কের জন্য বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠান আয়োজন করে। খবর আনাদোলুর।
হিব্রু ভাষার সংবাদমাধ্যম স্রুগিম জানিয়েছে, ওই প্রার্থনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কট্টর-ডানপন্থি ও ইসরায়েলি পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য ইয়েহুদা গ্লিক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আল আকসায় ইহুদিদের প্রবেশাধিকারের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন।
চার্লি কার্ক যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর উটাহ ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি নিহত হন।
ফিলিস্তিনি সরকারি সংবাদমাধ্যম ওয়াফা জানিয়েছে, বসতকারীরা আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশের পর ইহুদি আচার পালন করে, গান গায় ও নৃত্য করে। আসন্ন ইহুদি নববর্ষকে কেন্দ্র করে এ ধরনের তৎপরতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তারা। ওয়াফার মতে, কট্টর-ডানপন্থি বসতকারীরা বড় আকারে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এর আগে শনিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, ইহুদি ধর্মীয় উৎসব সামনে রেখে অধিকৃত পশ্চিম তীরে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হবে।
জেরুজালেমের ইসলামিক এনডাওমেন্টস ডিরেক্টরেট বলছে, ২০২২ সালের শেষ দিকে কট্টর-ডানপন্থি নেতা ইতামার বেন-গভির জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আল আকসায় উসকানিমূলক কর্মসূচি ও হামলার মাত্রা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
মুসলমানদের কাছে আল আকসা মসজিদ মক্কা ও মদিনার পর বিশ্বের তৃতীয় পবিত্র স্থান। তবে ইহুদিরা একে ‘টেম্পল মাউন্ট’ বলে দাবি করে, যেখানে তাদের দুটি প্রাচীন মন্দির ছিল বলে তারা বিশ্বাস করে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় ইসরায়েল এবং ১৯৮০ সালে পুরো শহরকে নিজেদের অংশ ঘোষণা করে। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কখনোই এ দখল ও সংযুক্তিকে বৈধতা দেয়নি।
ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ, বসতকারীদের এ ধরনের হামলা পূর্ব জেরুজালেমকে ‘ইহুদিকরণ’ করার বৃহত্তর পরিকল্পনারই অংশ। এর মাধ্যমে শহরের আরব ও ইসলামী পরিচয় মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ বসতকারীদের হাতে অন্তত ১ হাজার ৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং সাত হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন।
এদিকে গত জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) রায় দিয়ে বলেছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব সম্পূর্ণ অবৈধ এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম থেকে সব ধরনের বসতি সরিয়ে নেওয়া উচিত।
সূত্র : মিডলইস্ট মনিটর




























