
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: রাজধানীর মিরপুর বেড়িবাঁধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) প্রায় ৭২ কাঠা সরকারি জমি অবৈধভাবে বিক্রি করা হয়েছে। এরপর ওই জমিতে আবাসন প্রকল্প শুরু করেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী দুই নেতা, যা ‘আন-নামী রিভার ভিউ সিটি’ নামে পরিচিত। প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলেন আন-নামী প্রপার্টিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল আমিন দারা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিবুল্লাহ।
পরবর্তীতে ওই সাইটে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকায় ৭৬টি ভুয়া প্লট তৈরি করে বুকিং দেওয়া হয় পিচ রিয়েল এস্টেট নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। এরপরই জমিটি বেদখল-পাল্টা বেদখলের মধ্যে কয়েক বছর ধরে চলছিল। শেষ পর্যন্ত ওই জমিতে বস্তি ও মন্দির নির্মাণ করেন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ।
১০ বছরের বেশি সময় পার হলেও প্লট বুঝে না পেয়ে, গত বছরের ৬ অক্টোবর মামলাটি দায়ের করেন পিচ রিয়েল এস্টেটের সদস্য কামালুদ্দিন ফারুকী। মামলাটির তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
তথ্য অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০০৯ এবং ২০১১ সালে মোট ৮টি দলিলে সরকারি জমি রেজিস্ট্রি করা হয় পাউবোর সাবেক উপপরিচালক কাজী মো. মাহফুজুর রহমান এবং শনাক্তকারী ছিলেন জিল্লাদার আবদুর রব। রেজিস্ট্রির সময় ব্যবহৃত হয়েছিল পাউবোর অফিসিয়াল কাগজপত্র। এই তথ্য ফাঁস হয়েছে প্রায় ১০ বছর পর।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এখানে যোগসাজশে দুর্নীতি হয়েছে। যারা সরাসরি জড়িত, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত। পানি উন্নয়ন বোর্ডও দায় এড়াতে পারবে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপপরিচালক জহিরুল ইসলাম বলেন, সরকারি জমি বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। স্থানীয় অনুসন্ধানে জানা গেছে, জমি রেজিস্ট্রি দাতা কাজী মাহফুজুর রহমান ২০০৭ সালে অবসরে যান এবং গত বছরের ডিসেম্বরে মারা গেছেন। শনাক্তকারী আবদুর রব এখনও রাজধানীতে বসবাস করছেন।
মামলার বাদী কামালুদ্দিন ফারুকী জানান, জমি বিক্রি নিয়ে প্রতারণার ঘটনায় প্রায় ৫০০ জন সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু কায়সার বলেন, বিক্রির সময় মহিবুল্লাহ পাউবোর বরাদ্দের কাগজ দেখিয়েছিলেন, যা তৎকালীন মন্ত্রণালয়ের সচিবের স্বাক্ষরও বহন করছিল। কিন্তু বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ড সেই কাগজপত্র অস্বীকার করছে।





























