আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসনে বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দলটির তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপক অসন্তোষ ও সমালোচনা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বাগেরহাট-১ ও বাগেরহাট-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক দুই নেতাকে মনোনয়ন দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন বিএনপির দীর্ঘদিনের নেতাকর্মীরা।
জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, যারা গত ১৭ বছর রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন, জেল-জুলুম ও মামলা মোকদ্দমার শিকার হয়েছেন—তাদের বাদ দিয়ে সদ্য দলে আসা ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এতে দল সাংগঠনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন তারা।
বাগেরহাট-১ (ফকিরহাট–মোল্লাহাট–চিতলমারী) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্যজোটের সাধারণ সম্পাদক কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল। তিনি অতীতে চিতলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। পাশাপাশি তিনি বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) বাংলাদেশের মহাসচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
অন্যদিকে বাগেরহাট-৪ (শরণখোলা–মোরেলগঞ্জ) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্যজোটের সভাপতি সোমনাথ দে। তিনি এর আগে মোরেলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন এবং জাতীয় পার্টির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। গত বছরের আগস্টে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন এবং পরে বিএনপিতে যোগ দেন।
মনোনয়ন ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মনোনয়নপ্রাপ্তদের পুরোনো ছবি ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে সমালোচনা আরও তীব্র হয়।
জেলা বিএনপির কর্মী জিল্লুর রহমান ডিয়ার বলেন, “যারা বছরের পর বছর রাজপথে ছিলেন, তাদের বাদ দিয়ে অতিথি পাখিদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আমরা এটা মেনে নিতে পারছি না।”
আরেক কর্মী মো. শিমুল বলেন, “সারা বছর আন্দোলনে থেকেও যারা মনোনয়ন পাননি, তাদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে।”
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, “মনোনয়ন কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত। তবে তৃণমূল নেতাকর্মীদের ক্ষোভের বিষয়টি আমরা কেন্দ্রকে জানিয়েছি।”
মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে বাগেরহাট-২ ও বাগেরহাট-৪ আসনে বিক্ষোভ মিছিল ও মশাল মিছিল করেছেন মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীদের সমর্থকরা। তারা দাবি না মানা হলে রাজপথে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।