
আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: বিদেশে ভালো বেতনের চাকরির স্বপ্ন দেখানো এখন দালাল চক্রের বড় ব্যবসা। প্রতিদিন অসংখ্য পরিবার প্রতারণার শিকার হচ্ছে, হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকা এবং সন্তানরা আটকে থাকছে বিদেশের অচেনা রুমে, ন্যূনতম খাবার ছাড়াই মানবেতর জীবনযাপন করছে। এরই সর্বশেষ শিকার হয়েছেন জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার তরুণ আব্দুর রহিম (শিশির), বয়স ২২।
লোভনীয় বেতনের প্রলোভন, এরপর ভয়াবহ প্রতারণা
স্থানীয়ভাবে পরিচিত দুবাই প্রবাসী মো. ফজলুল হক শিশিরকে জানায়—“দুবাইয়ে ভালো বেতনের চাকরি দেবে।” পরিবারকে দেখানো হয় উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন। এরপর ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় দালাল চক্র।
সব কাগজপত্র প্রস্তুত করে শিশিরকে পাঁচ মাস আগে দুবাই পাঠানো হয়। কিন্তু দুবাই পৌঁছানোর পর শুরু হয় ভয়াবহ বাস্তবতা। প্রতিশ্রুত চাকরি তো দূরের কথা, শিশিরকে কোনো কাজই দেওয়া হয়নি। বরং কৌশলে তার পাসপোর্ট ও সব কাগজপত্র নিয়ে তাকে একটি রুমে আটকে রাখা হয়।
এরপর ফজলুল হক বাংলাদেশে ফিরে আসে এবং শিশিরের সঙ্গে পরিবারের সব যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
“আমি আর কিছু চাই না, শুধু আমার ছেলেটাকে ফেরত চাই”—শিশিরের মায়ের বিলাপ
শিশিরের মা শিউলি বেগম জানান—
“মাসখানেক আগে সে ফোন দিয়ে বলেছিল খুব কষ্টে আছে। দুইদিন পরপর খাবার খেতে পারে। রুমে আটকে রেখেছে। আমার ছেলে বেঁচে আছে কি না, কিছুই জানি না।”
একজন মায়ের এই আর্তনাদ এখন পুরো এলাকায় আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
আরও ভুক্তভোগী থাকতে পারে
স্থানীয়দের অভিযোগ-ফজলুল হকের সাথে একটি দালাল চক্র রয়েছে। সে শুধু শিশির নয়, একই এলাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক মানুষকে এর আগে দুবাই নিয়ে গিয়ে আটকেছে। সবার পাসপোর্ট নিয়ে তাদের রুমে বন্দি রাখা হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম বলেন,
“শিশির ছাড়া আরও কয়েকজন আটকা পড়েছে। তাদের উদ্ধারের পথ খুঁজতে আলোচনা চলছে।”
আইনি পদক্ষেপ: মেলান্দহ থানার ওসি ময়নুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন, ঘটনার বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছ
সতর্কবার্তা: আপনার পরিবারকে বাঁচাতে যা করবেন
১. কখনোই কোনো দালাল বা ব্যক্তিগত পরিচয়ের ওপর নির্ভর করে বিদেশে যাবেন না।
২. বিদেশ যাত্রার আগে নিশ্চিত হোন—সংস্থা BMET/BOESL অনুমোদিত কি না।
৩. টাকা লেনদেন হলে অবশ্যই রসিদ ও চুক্তিপত্র নিন।
৪. পাসপোর্ট ও কাগজপত্র কখনো কারও কাছে জমা দেবেন না।
৫. বিদেশে আটকে গেলে স্থানীয় দূতাবাসে দ্রুত যোগাযোগ করুন।































