আওয়ার টাইমস্ নিউজ।
কাতারের সঙ্গে সউদী জোটের সমঝোতা মুসলিম জাহানে স্বস্তি আনলেও সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর কিছুটা অস্বস্তিতে ভুগছে!
২০১৭ সালে সউদী আরবের নেতৃত্বে আমিরাত, বাহরাইন ও মিসর কাতারের ওপর যে অবরোধ দিয়েছিলো, তাতে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলো মিসর ও আমিরাত!
গত তিন বছরে এ অবরোধের কারণে আমিরাত ও মিসর দাবিয়ে বেড়িয়েছে এ অঞ্চল। সউদী আরবকে পাস কাটিয়ে আমিরাতই যেনো হয়ে উঠেছিলো মধ্যপ্রাচ্যের মোড়ল!
বিশেষ করে, ২০১৩ সালে মিসরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুহম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সামরিক জান্তা সিসিকে সরাসরি সমর্থন এবং সউদী যুবরাজ সালমানের ওপরে প্রভাব আবুধাবীর রাজতন্ত্রকে আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তুলে। আত্মবিশ্বাস ও অহংকার এতোটা তুঙ্গে উঠেছিলো যে, আমিরাত মুসলিম অন্যান্য দেশের ওপর চড়াও হওয়ারও চেষ্টা করেছিলো বারবার! এমনকি তুরস্কের বিরুদ্ধে এতোটাই আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিয়েছিলো – যার দ্বিতীয় উদাহরণ মুসলিম জাহানে বিরল! সেই আমিরাত এখন তুরস্কের সঙ্গে সুসম্পর্ক করার আহ্বান জানিয়েছে!
আরব আমিরাতের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনোয়ার গারগাশ আবুধাবী ভিত্তিক স্কাইনিউজ আরবি চ্যানেলকে বলেছেন: সংযুক্ত আরব আমিরাত পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ককে স্বাভাবিক করতে চায়।
গারগাশ তার সর্বশেষ সাক্ষাৎকারে তিনবার জোর দিয়ে বলেছেন: সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে তুরস্কের সমস্যা বা দ্বন্দ্ব অথবা মতবিরোধের ভাল কোনো কারণ নেই। আমরা আরব জাহানে তুরস্কের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার … আমাদের সঙ্গে তুরস্কের কোন সীমান্ত সমস্যা নেই … আমাদের মাঝে অবশ্যই নতুন করে সেতুবন্ধন করতে হবে।
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তিকামী বা শান্তিপ্রিয় মানুষের মনে আশা জাগানোর মতো কিছু বিবৃতি। চমৎকার সব শব্দ দিয়ে গড়া সময়োপযোগী কিছু বাক্য বিন্যাস! কিন্তু এ বিবৃতি মিথ্যা আশা দেখানোর বা মনোযোগ অন্যদিকে ফিরানোর ব্যর্থ প্রয়াস কিনা, তা ভেবে দেখার বিষয়। কেননা, উপরোক্ত কথাগুলোর পরেই গারগাশ ঝুলি থেকে আসল বেড়ালটি বের করেছেন! তিনি বলেছেন:আবুধাবী চায়- তুরস্ক যেনো আরব জাহানের সঙ্গে তার সম্পর্কের কম্পাস পুনরায় ঠিক করে। তুরস্ক যেনো মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রথমিক সমর্থক না হয়। তুরস্কের সঙ্গে আমিরাতের সমস্যার মূল কারণ হচ্ছে – তুরস্ক আরব দেশগুলোতে তার ভূমিকা প্রসারিত করতে চায়।
আসলে এ কথার মাধ্যমে গারগাশ আরব আমিরাতকে আরব জাহানের নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণের ব্যর্থ প্রচেষ্টা করছেন। আর আরব জাহানের পক্ষে তুরস্ককে কিছু শর্তও জুড়ে দিয়েছেন। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি।