আওয়ার টাইমস্ নিউজ।
তুরস্কের প্রধান শহরগুলো কয়েক মাসে পানিশূন্য হয়ে যাবে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে! ইতোমধ্যেই পুরো দেশে পানির জন্যে হাহাকার দেখা দিয়েছে! সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দেশটির সবচেয়ে বড় এবং গোটা ইউরোপের সবচেয়ে জনবহুল (এক কোটি ৭০ লাখ) শহর ইস্তাম্বুলের। অনাবৃষ্টিতে ৪৫ দিনেই পানিশূন্য হয়ে পড়বে শহরটি!
তুর্কি রাসায়নিক প্রকৌশলীদের মতে, এক দশকের ভেতরে অনাবৃষ্টিতে দেশটিতে সবচেয়ে মারাত্মক খরার সৃষ্টি হয়েছে! পানিশূন্যতায় ইতোমধ্যে ১৭ মিলিয়ন মানুষ দেশটির মেগাসিটিগুলো ছেড়েছে!
আঙ্কারার মেয়র মনসুর ইয়াভা জানিয়েছেন, এ মাসের শুরুর দিকে রাজধানীর বাঁধ ও জলাধারগুলোতে ব্যবহারের জন্যে ১১০ দিনের পানি মজুদ ছিলো।
ইস্তাম্বুল ওয়াটার এন্ড স্যুয়েরেজ অথোরিটি’র মতে, দেশটি বর্তমানে ‘ওয়াটার স্ট্রেস’-এ ভুগছে। কেননা, সেখানকার জলাধারগুলোয় মাত্র ২৯.৮% পানি মজুদ রয়েছে। ২০১৪ সালের এক খরায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিলো যে, সেখানে মাত্র ১০০ দিনের মতো পানি মজুত ছিলো!
দেশের অন্যান্য শহরেরও একই অবস্থা। আরো দুটি বড় শহর ইজমির ও বুরসার বাঁধগুলোতে যথাক্রমে ৩৬% ও ২৪% পানি মজুত রয়েছে। এ অবস্থার জন্যে নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে দায়ী করা হচ্ছে। উন্নয়ন কাজে পানির অপরিমিত ব্যবহারের কারণেই এ সঙ্কট বলে অভিযোগ উঠেছে। সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ায় ইস্তাম্বুলের পানি সরবরাহের প্রধান উৎস ওমেরিল বাঁধের পানির স্তর গত ১৫ বছরে সর্বনিম্নে নেমে গেছে।
পুরো দেশে খরা এমন প্রকটভাবে দেখা দিয়েছে যে, গত মাসে মসজিদসহ ইবাদতগাহগুলোতে বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে! নভেম্বরে দরকারের তুলনায় মাত্র অর্ধেক বৃষ্টি হয়েছে। ফলে, দেশটিতে পানির ভয়াবহ অভাব দেখা দিয়েছে।
তুরস্ক দেশটি প্রধানত চরমভাবাপন্ন প্রকৃতির। এখানে পানির অভাব সদাই থাকে। বছরে দেশটি মাত্র ১,৩৪৬ ঘনমিটার পানি উৎপাদন করে থাকে। প্রত্যেক শহরে বাঁধ ও রিজারভার তৈরি করে পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। বৃষ্টির সময় বাঁধের অভ্যন্তরে জমা পানির ওপরই নির্ভর করতে হয় সারা বছর।
২০৩০ সালের মাঝে অবস্থা খুবই শোচনীয় হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। কেননা, বর্তমান বছরগুলোর শুষ্ক মাসগুলোতেই ইস্তাম্বুলের প্রায় ১৪ মিলিয়ন মানুষ পানির অভাবে ভোগেন। তাই, এখনই যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে, অদূর ভবিষ্যতে ইস্তাম্বুলকে যে মারাত্মক পানির সংকটে ভুগতে হবে, তা বলাই বাহুল্য। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।