আওয়ার টাইমস্ নিউজ।
সম্প্রতি আইসিসি’র (আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত) প্রধান প্রসিকিউটরের এক আবেদনে গত সপ্তাহান্তে দেয়া এক রায়ে পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরাইল ও হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে আইসিসি’র তদন্ত চালুর এখতিয়ার রয়েছে বলে ঘোষিত হয়েছে। আর এ তদন্ত শুরু হলে, প্রবাসী বহু ইসরাইলি গ্রেফতার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে, ইসরাইলের সাবেক ও বর্তমান সামরিক কয়েকশ’ কর্মকর্তাকে ব্রিফিংয়ের জন্যে ডেকেছে সরকার।
গত জুলাইয়েই আইসিসি তদন্তের অনুমোদন দিলে, গ্রেপ্তার হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা শীর্ষ কর্মকর্তাদের একটি গোপন তালিকা করে ইসরাইল। সরকারের জ্যেষ্ঠ্ কর্মকর্তারা জানান, ইতোমধ্যে আইসিসি’র কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র জানিয়েছে যে, তাদের দেশে যাওয়ার পর, ইসরাইলি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত নেয়া বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে আগেভাগেই ইসরাইলকে সতর্ক করা হবে; পাশাপাশি গোপন তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার এড়াতে বিদেশে না যেতে বলতে পারে ইসরাইল সরকার।
এদিকে, শনিবার ইসরাইলের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা জানান, আইসিসি এখনো ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত চালু করেনি। তাই, ইসরাইলি নাগরিকদের এখনই ঐ প্রি-ট্রায়াল চেম্বারের রায়ের ফলে গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কা নেই। আইসিসি তদন্ত চালু করলে, আদালতে বিচারের সম্মুখীন হওয়া যে কোনো নাগরিককে পুরোপুরি আইনি সুরক্ষা দিতে প্রস্তুত রয়েছে তারা।
ইসরাইলি সংবাদ-মাধ্যম হারেৎস জানায়, ধারণা করা হচ্ছে – তদন্তটি চালু হলে, আইসিসি ইসরাইলের মন্ত্রী, জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার বা জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তার মতো উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের উপরই জোর দেবে।
রায়টির তীব্র সমালোচনা করেছে ইসরাইল সরকার ও সামরিক বাহিনী। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে রায়টিকে ‘ইহুদিবিরোধী’ বলে আখ্যা দিয়ে বলেন: ইসরাইল ন্যায়বিচারের এ বিকৃতির বিরুদ্ধে পুরো শক্তি নিয়ে লড়বে। আদালতটি একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। আইসিসি সত্যিকারের যুদ্ধাপরাধ অগ্রাহ্য করে ইসরাইলের মতো শক্ত গণতান্ত্রিক সরকারের মতো দেশের পিছু লেগেছে।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আইসিসির রায়টি দুঃখজনক।
ইসরাইল তাদের ভূখণ্ডে আইসিসির কর্তৃত্ব অস্বীকার করে। তা সত্ত্বেও গত দু বছর ধরে অবৈধ দেশটির সামরিক এডভোকেট জেনারেলের কার্যালয় ও বিচার মন্ত্রণালয় গোপনে আদালতের প্রাথমিক তদন্তকারী দলকে দিতে নথিপত্র প্রস্তুতের কাজ করে আসছে। ইসরাইলী এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, আইসিসির পূর্ণ তদন্তের জন্যে প্রস্তুত রয়েছে ইসরাইল।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর ফাতৌ বেনসুদা ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। ঐ বছর তিনি জানিয়েছিলেন, আদালত অনুমোদন দিলে, অপরাধ তদন্তটি ২০১৪ সালে ইসরাইল ও হামাসের বিরুদ্ধে হওয়া সংঘাত, ইসরাইলের বসতি স্থাপন নীতিমালা এবং গাজা সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে ইসরাইলের প্রতিক্রিয়া খতিয়ে দেখা হবে। সূত্র: দ্য হারেৎস।