আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ঐতিহাসিক ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনুস ঘোষণা দিয়েছেন যে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, নতুন প্রবর্তিত আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (PR) পদ্ধতির মাধ্যমে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে।
জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ও গণভোটের প্রস্তুতি
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনুস বলেন—
জুলাই সনদের আলোকে আমরা গণভোটের ব্যালটে উপস্থাপনীয় প্রশ্নও নির্ধারণ করেছি। প্রশ্নটি হবে, ‘আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?’”
গণভোটে চারটি মূল প্রস্তাব
ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা জানান, গণভোটে ভোটাররা নিম্নলিখিত চারটি বিষয়ে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিতে পারবেন:
১. তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠন:
জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গঠিত হবে।
২. দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদ:
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে, এবং সংবিধান সংশোধনের জন্য উচ্চকক্ষের অনুমোদন লাগবে।
৩. ৩০ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন:
নারীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার মতো প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়িত হবে।
৪. রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন:
জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কারসমূহ রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।
রাষ্ট্রপতির সই ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বহুল প্রত্যাশিত জুলাই সনদে সই করেন। তবে ছাত্র ও নাগরিক সমাজের একটি অংশ জানিয়েছে, তারা চান এই সনদে যেন “জনগণের অনুমোদিত রাষ্ট্রপতি”র স্বাক্ষর থাকে, যাতে গণআস্থার প্রশ্নে কোনো বিতর্ক না থাকে।
রাজনৈতিক পরিবর্তনের নতুন অধ্যায়
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস বলেন,
“জুলাই সনদ শুধু একটি রাজনৈতিক চুক্তি নয়, এটি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনর্গঠনের রূপরেখা। জনগণই এবার ঠিক করবেন, তারা নতুন পথে হাঁটতে চান কি না।”