
আওয়ার টাইমস নিউজ।
সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের এক কর্মসূচিতে জানানো হয়েছে—আজ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন। কোন বিষয়ে তিনি কথা বলবেন, তা কর্মসূচিতে উল্লেখ করা না হলেও সমসাময়িক বিষয় নিয়েই তিনি কথা বলবেন বলে জানানো হয়েছে। তবে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর গুঞ্জন—এই সংবাদ সম্মেলন থেকেই তিনি উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন।
গত ৯ নভেম্বর ঢাকা-১০ আসনের ভোটার হওয়ার আবেদন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা। একই সঙ্গে ঢাকায় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণাও দেন তিনি। ঢাকা-১০ আসনটি ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, কলাবাগান ও হাজারীবাগ থানা নিয়ে গঠিত।
গুঞ্জন ছিল—বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা কিংবা বিএনপিতে যোগ দিয়ে আসিফ মাহমুদ সরকার থেকে পদত্যাগ করে ঢাকা-১০ আসনে নির্বাচন করবেন। তবে বিএনপি দ্বিতীয় দফার তালিকায় এই আসনে শেখ রবিউল আলম-কে প্রার্থী ঘোষণা করায় সে জল্পনা অনেকটাই স্তিমিত হয়েছে।
আসিফ মাহমুদের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে-যা কুমিল্লা-৩ আসনের অন্তর্ভুক্ত। তবে তিনি আগেই জানিয়েছিলেন, এই আসন থেকে তিনি নির্বাচন করবেন না।
নিজের ভোট ঢাকায় আনার উদ্দেশ্য
ঢাকা-১০ আসনে ভোটার হওয়ার আবেদন সম্পন্ন করার পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “যেহেতু ঢাকা থেকে নির্বাচন করব এটা মোটামুটি নিশ্চিত, সেজন্য নিজের ভোটটাও ঢাকায় নিয়ে আসা। ভোটটা অপচয় হোক তা চাই না।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ভোটার হওয়ার পর দুটি নির্বাচন হয়েছে, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে। সে সময় কেউই ভোট দিতে পারেনি। এবার যেন ভোট দিতে পারি, সেটা নিশ্চিত করলাম। নির্বাচন কোন আসন থেকে করব, এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে ঢাকা থেকেই করব, ইনশাআল্লাহ।” তবে দলে যোগদানের বিষয়ে তিনি জানান,“এখন পর্যন্ত পরিকল্পনা স্বতন্ত্র নির্বাচন করার। পরে দেখা যাবে।”
গণঅধিকার পরিষনের সঙ্গে পুরনো সম্পৃক্ততা।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আগে দীর্ঘদিন তিনি ছাত্র অধিকার পরিষদের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন। ফলে গণঅধিকারে ফের যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা আছে।
দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, “তিনি দীর্ঘদিন আমাদের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। যদি সরকার থেকে পদত্যাগ করে আবার যুক্ত হতে চান, আমরা স্বাগত জানাব। তবে সিদ্ধান্ত পুরোপুরি তার।”
এনসিপিতে যোগদান-এখনও অনিশ্চিত।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন,
“কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। তিনি চাইলে স্বাগত জানাব, তবে এটি তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।”
দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারও একই তথ্য দেন। তিনি জানান, দুই-এক দিনের মধ্যেই প্রথম ধাপের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।
অন্যদিকে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তিনি এখনও পদত্যাগ বা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেননি।
এনসিপির অভ্যন্তরীণ আলোচনা
পার্টির একজন নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তি জানান,
“আসিফ ও মাহফুজকে নিয়ে আলোচনা আছে। দু’এক দিন আগে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। বিদ্যমান কাঠামোতে তারা যুক্ত হতে আগ্রহী নন। প্রয়োজনে সম্মানজনক পদ তৈরি হতে পারে। অথবা কাউন্সিলের মাধ্যমে যোগ দেওয়ার পথও আছে।”
তিনি জানান “আগামীকাল প্রথম ধাপের তালিকা প্রকাশ হচ্ছে, সেখানে তাদের নাম থাকবে না। পরবর্তী তালিকায় থাকতে পারে—সবই নির্ভর করছে আলোচনার ওপর।”
মাহফুজ আলমের সম্ভাব্য আসনও ‘বন্ধ’
তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের সম্ভাব্য আসন ছিল লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ)। বিএনপি যদি আসনটি ছাড়ত, তিনি জোটগতভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারতেন। তবে বিএনপি ইতোমধ্যে এই আসনে শাহাদাত হোসেন সেলিম-কে মনোনয়ন দেওয়ায় সেই সম্ভাবনাও প্রায় শেষ।



























