
আওয়ার টাইমস নিউজ।
অর্থনীতি: দেশে আবারও বেড়েছে স্বর্ণের দাম। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে ভরিতে ১ হাজার ৪৬৯ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ২ হাজার ১৯৫ টাকা। দেশের ইতিহাসে এটাই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ দাম।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে পিওর গোল্ড বা তেজাবি স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির কারণে দেশীয় বাজারেও এই সমন্বয় আনা হয়েছে। ৮ অক্টোবর (বুধবার) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে সংগঠনটি নিশ্চিত করেছে।
নতুন নির্ধারিত দরের তালিকা অনুযায়ী—
২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণ: ২,০২,১৯৫ টাকা
২১ ক্যারেটের এক ভরি: ১,৯৩,০০৪ টাকা
১৮ ক্যারেটের এক ভরি: ১,৬৫,৪৩১ টাকা
সনাতন পদ্ধতির এক ভরি: ১,৩৭,৪৭২ টাকা
এর সঙ্গে সরকার নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস নির্ধারিত ন্যূনতম ৬ শতাংশ মজুরি যুক্ত থাকবে। গহনার ডিজাইন ও মানভেদে এই মজুরিতে কিছুটা পার্থক্য হতে পারে বলে জানায় সংগঠনটি।
এর আগে ৬ অক্টোবর বাজুস স্বর্ণের দাম বাড়িয়ে প্রতি ভরিতে ৩,১৫০ টাকা বাড়িয়েছিল। সেই সময় ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়ায় ২ লাখ ৭২৬ টাকা, যা সেই মুহূর্তে ছিল সর্বোচ্চ।
বিশ্লেষণ:
চলতি বছরে বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম মোট ৬২ বার সমন্বয় করা হয়েছে, এর মধ্যে ৪৪ বার দাম বেড়েছে, আর কমেছে মাত্র ১৮ বার। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আন্তর্জাতিক অস্থিরতা, ডলারের উচ্চমূল্য, এবং বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ সম্পদ হিসেবে স্বর্ণের ওপর নির্ভরতা সব মিলিয়ে বাজারে তৈরি হয়েছে ক্রমবর্ধমান চাপ।
বিশ্ববাজারে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক টানাপোড়েন, তেলের দাম বৃদ্ধি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ কেনার প্রবণতা দাম বাড়ার অন্যতম কারণ। এর প্রভাব সরাসরি পড়ছে বাংলাদেশের বাজারেও।
রুপার বাজারেও একই ধারা দেখা গেছে। ভরিতে ১,০২৬ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেট রুপার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪,৬৫৪ টাকা, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
বিশ্ববাজারে অনিশ্চয়তা যত বাড়ছে, বিনিয়োগকারীরা তত বেশি নিরাপদ সম্পদ হিসেবে স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি বৈশ্বিক মন্দা, যুদ্ধ বা রাজনৈতিক সংকট আরও গভীর হয়, তাহলে আগামী মাসগুলোতে স্বর্ণের দাম আরও এক দফা বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে স্থানীয় বাজারে ডলার স্থিতিশীল হলে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমার সম্ভাবনাও অস্বীকার করা যায় না।



























