
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ইসলামী ডেস্ক: আমরা অনেকেই আড্ডার ছলে, হাসির খোরাক কিংবা নিজের শ্রেষ্ঠত্ব দেখাতে গিয়ে অনায়াসে বলে ফেলি, আমি তো যা বলছি, সত্যিটাই বলছি! কিন্তু আমরা কি জানি, এভাবেই মুখ দিয়ে বেরিয়ে যায় এমন একটি পাপ, যা কবর পর্যন্ত পিছু নেয়? এই কথাটাই যদি অন্যের অনুপস্থিতিতে বলা হয়, আর সে শুনলে কষ্ট পায়,তাহলেই তা গীবত, চরম গুনাহ।
পবিত্র কুরআনে গীবতের ভয়াবহতা তুলনা করা হয়েছে নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে। আল্লাহ তা’আলা বলেন:
তোমাদের কেউ কি পছন্দ করবে যে, সে তার মৃত ভাইয়ের গোশত খাবে? (সূরা হুজুরাত, আয়াত ১২)
আমরা অনেকেই জানিই না যে গীবত কীভাবে আমাদের মুখ থেকে বের হয়ে যায়। কেউ হাসতে হাসতে বলে, ও তো এমনই”, কিংবা ও তো সবসময় দেরি করেই আসে, আরেকজনের দোষ বলেই চলেছি, ভাবছি এ তো সত্যি, এ আবার কী পাপ! অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) স্পষ্ট করে বলেছেন:
তুমি যদি তোমার ভাইয়ের এমন কোনো দোষ বল যা সে সত্যিই করে, তবে তা গীবত। আর যদি মিথ্যা বলে থাকো, তবে তা অপবাদ (বুহতান)।
(মুসলিম: ২৫৮৯)
সুতরাং, সত্য বলছি, বলেও গীবতের দায় এড়ানো যায় না। বরং সেটা হচ্ছে আসল গীবত, আর মিথ্যা বললে সেটা হচ্ছে অপবাদ, যার শাস্তি আরও ভয়ঙ্কর।
গীবতের ফল কী হতে পারে?
হাদীসে এসেছে, গীবতকারী কিয়ামতের দিন এমন অবস্থা নিয়ে উঠবে, যার আমলনামায় নামাজ, রোজা, হজ সব থাকবে কিন্তু গীবতের জন্য তার সওয়াবগুলো একে একে অন্যের খাতায় চলে যাবে। আর যদি আর কাউকে দেওয়ার মতো সওয়াব না থাকে, তাহলে তার গুনাহ তার খাতায় লেখা হবে।
একটি কথায় জীবন ধ্বংস:
সোশ্যাল মিডিয়া, ফোন কল বা বাসার রান্নাঘরে চায়ের কাপ হাতে গীবত হয়তো আজকাল অনেক সহজ। কিন্তু সহজেই বলা এই কথাগুলো আখিরাতে আমাদের জন্য হতে পারে ধ্বংসের ফাঁদ।
কীভাবে বাঁচা যাবে?
১. গীবতের পরিচয় ভালোভাবে জানতে হবে।
২. কোনো কথা বলার আগে ভাবুন সামনে থাকলে তার সম্পর্কে এমন বলতেন কি না।
৩. অন্য কেউ গীবত করলে থামানোর চেষ্টা করুন, না পারলে চুপ থাকুন।
৪. আল্লাহর কাছে গীবত থেকে রক্ষা পাওয়ার দোয়া করুন।
হে আল্লাহ! আমাকে আমার জিহ্বার অনিষ্ট থেকে রক্ষা করো।
যারা অন্যের দোষ লুকায়, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের দোষ গোপন রাখবেন। আর যারা মানুষের দোষ খোঁজে বেড়ায়, তারা নিজেরাই ধ্বংস হয়ে যায়।
(আবু দাউদ)





























