
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক: লেবাননের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান নাইম কাসেম যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনাকে ‘বিপজ্জনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। শনিবার (৪ অক্টোবর) দুই হিজবুল্লাহ কমান্ডারের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ইসরায়েল সামরিকভাবে যা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে, এখন তারা সেটি রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে হাসিল করতে চাইছে।
কাসেমের দাবি, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই প্রস্তাব আসলে ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক পরিকল্পনারই অংশ। তিনি বলেন, এই পরিকল্পনা বিপদে ভরা, এটি ইসরায়েলের প্রকল্প। তারা সামরিক আগ্রাসন, গণহত্যা ও দুর্ভিক্ষের মাধ্যমে যা করতে পারেনি, এখন তা রাজনীতির ছদ্মবেশে বাস্তবায়ন করতে চায়।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন ২০ দফাবিশিষ্ট একটি গাজা পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে, যেখানে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি, জিম্মিদের মুক্তি ও প্রশাসনিক পরিবর্তনের প্রস্তাব রাখা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব অনুযায়ী, গাজায় ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ২০ জন জীবিত জিম্মিকে ফিরিয়ে দিতে হবে এবং বিনিময়ে ইসরায়েলের হাতে আটক শত শত ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে। তবে হামাস এ প্রস্তাবে আংশিক সম্মতি জানিয়ে জানিয়েছে, কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত নিয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন।
নাইম কাসেম বলেন, ইসরায়েল এই পরিকল্পনার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের রাজনৈতিকভাবে দুর্বল করতে চাইছে। গাজা ও পশ্চিম তীরের পাশাপাশি তারা ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ ধারণা বাস্তবায়ন করতে চায়, যা জর্ডান, লেবানন ও সিরিয়ার কিছু অংশকেও অন্তর্ভুক্ত করে। তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, এই প্রকল্প যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশই এর প্রভাবের মুখে পড়বে।
হিজবুল্লাহ প্রধান আরও জানান, হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী যৌথভাবে এই প্রস্তাব গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, আমরা সেই সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করব না, তবে এটি পরিষ্কার যে এই পরিকল্পনা গাজার জন্য নয়, বরং ইসরায়েলের স্বার্থ রক্ষার জন্য।
বিশ্লেষকদের মতে, নাইম কাসেমের এই বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যে নতুন উত্তেজনা তৈরি করতে পারে। কারণ, হিজবুল্লাহর অবস্থান পরিবর্তন মানেই লেবানন সীমান্তে নতুন সংঘাতের সম্ভাবনা। একই সঙ্গে গাজার চলমান যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবও আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
সূত্রঃ আল-জাজিরা, বিবিসি



























