
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য চোখে পড়েছে সারা বিশ্বের। দীর্ঘ সময় পর ঘরে মুরগির মাংস দেখে আনন্দে সেজদায় লুটিয়ে পড়েছে এক ফিলিস্তিনি শিশু। সেই ভিডিও এখন ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, যা দেখে অনেকে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েছেন।
দীর্ঘ দুই বছরের অবরোধ ও যুদ্ধের কারণে গাজার সাধারণ মানুষের জীবন আজ এক দুঃসহ বাস্তবতা। ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন হামলা আর ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও বেঁচে থাকা ফিলিস্তিনিদের কাছে এক টুকরো মাংস বা ফল দেখা যেন স্বপ্নের মতো। যুদ্ধকালীন সময়ে ইসরায়েল গাজায় কোনো মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দেয়। এমনকি ফিলিস্তিনি জেলেদের সাগরে মাছ ধরাও নিষিদ্ধ ছিল।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে গাজায়। ক্ষতিগ্রস্ত বাজারগুলো ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করে, আর অনেক পরিবার আবারও পছন্দের খাবার রান্নার সুযোগ পায়।
এই সময় এক ফিলিস্তিনি বাবা বহুদিন পর সন্তানদের জন্য মুরগির মাংস কিনে আনেন। ঘরে ঢোকার মুহূর্তেই শিশুরা মাংস দেখে বিস্ময়ে চিৎকার করে ওঠে, “আল্লাহ মহান! এটা কি সত্যিই মুরগি?” এরপরই এক শিশু আনন্দে সেজদায় পড়ে যায়।
Al Jazeera প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, ধ্বংসস্তূপে বসা তিনটি শিশু মাংস পেয়ে উল্লাসে ফেটে পড়ছে। আরেকটি ভিডিওতে এক শিশুর হাতে আপেল তুলে দিয়ে নাম জানতে চাইলে সে বলে “তরমুজ”। যুদ্ধের ভয়াবহতা এতটাই যে, শিশুরা ফলের নামও ভুলে গেছে।
মানবিক এই দৃশ্য দেখে সারা বিশ্বে আবেগের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে। গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে এখনো লাখো মানুষ খাদ্য ও চিকিৎসা সংকটে ভুগছে। শিশুদের অপুষ্টি ও ক্ষুধা মৃত্যুর হার ক্রমেই বাড়ছে। অনেক পরিবার এখনও বেঁচে আছে ঘাস, লতা-পাতা ও বিশুদ্ধ পানির স্বল্পতায়।
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ থেমে গেলেও মানবিক সংকট এখনো গভীর। পুষ্টিকর খাবার পাওয়া সেখানে এখনো এক ধরনের বিলাসিতা।
সূত্র: Al Jazeera






























