
আওয়ার টাইমস নিউজ।
রাজনীতি: সরকার প্রতি বছর আন্তর্জাতিক এসএমএস খাত থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। অভিযোগ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিতর্কিত প্রশাসনিক নির্দেশনা এখনও বহাল থাকায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) নীতিমালা অনুযায়ী কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) চালুর পর থেকেই আন্তর্জাতিক এসএমএস সেবা মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের হাতে দেওয়া হয়। নীতিমালা অনুযায়ী ইন্টারনেট ব্যতীত সব আন্তর্জাতিক সেবা আইজিডব্লিউর মাধ্যমে পরিচালনা করা উচিত ছিল। অভিযোগ, বিদেশি মোবাইল কোম্পানির চাপের কারণে বিটিআরসি গাইডলাইন ও নীতিমালা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে।
২০১৭ সালের ১৪ মার্চ বিটিআরসি আন্তর্জাতিক এসএমএস সেবার নিয়মিত পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে। সব পক্ষ টেকনিক্যাল বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায় এবং খসড়া ট্যারিফও নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হলে আইসিটি উপদেষ্টা সজীব জয় অনুমোদন নাকচ করেন এবং মোবাইল অপারেটরদের হাতে সেবা রাখার পক্ষে মত দেন। সেই প্রশাসনিক আদেশই এখনও বহাল রয়েছে।
রাজস্ব ক্ষতির হিসাব:
মাসে প্রায় ৩ কোটি আন্তর্জাতিক এসএমএস বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। বর্তমান বাজারদরে এ থেকে আয়ের সম্ভাবনা ২৪ লাখ ডলার। তবে বর্তমানে বিটিআরসি মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে মাত্র ১ লাখ ৫৬ হাজার ডলার আয় করতে পারছে। নীতিমালা অনুযায়ী আইজিডব্লিউর মাধ্যমে পরিচালনা করলে মাসিক আয় দাঁড়াত ১২ লাখ ৫ হাজার ডলার। অর্থাৎ বর্তমান আয়ের চেয়ে প্রায় ৮ গুণ বেশি। এ হিসাবে সরকার বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
মানি লন্ডারিং ও নিরাপত্তা ঝুঁকি:
বিদেশি মোবাইল অপারেটররা বিদেশে থাকা সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একতরফা চুক্তি করে আন্তর্জাতিক এসএমএস পরিচালনা করছে। ফলে প্রকৃত ট্যারিফ আড়াল হচ্ছে, বৈদেশিক মুদ্রা দেশের বাইরে যাচ্ছে, এবং জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির পাশাপাশি মানি লন্ডারিংয়ের সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
সমাধান ও করণীয়:
আইজিডব্লিউ অপারেটররা নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবসা পরিচালনা করলে সরকারের রাজস্ব আট থেকে দশ গুণ বৃদ্ধি পাবে। সেক্টরের স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত হবে এবং দেশীয় বিনিয়োগকারীর স্বার্থও রক্ষা পাবে। আইজিডব্লিউ অপারেটরদের সংগঠন (আইওএফ) জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক এসএমএস ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন, কিন্তু অনুমোদন না পাওয়ায় বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
বিটিআরসির বক্তব্য:
কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ইকবাল আহমেদ জানান, তারা সেক্টরের রিফর্মে কাজ করছে। সকল পক্ষের প্রস্তাবের ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যাতে সরকারের রাজস্ব সর্বাধিক বৃদ্ধি পায়। তিনি বলেন, বর্তমানে সরকার রাজস্ব পাচ্ছে, তবে ২০০ কোটি টাকার ক্ষতির বিষয়টি ঠিক নয়।




























