
আওয়ার টাইমস নিউজ।
নিউজ ডেস্ক: আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংঘটিত গুম-খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিন মামলায় কারাগারে পাঠানো সেনা কর্মকর্তারা ‘নির্দোষ’ এমন দাবি করেছেন তাদের আইনজীবী এম সরোয়ার হোসেন।
বুধবার সকালে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার পর তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১।
“সব হয়েছে হাসিনা ও কামালের নির্দেশে”
শুনানি শেষে সাংবাদিকদের এম সরোয়ার হোসেন বলেন,
“আমার মক্কেলরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন। তারা বিচারের মুখোমুখি হতে চান। তারা এই অপরাধ সংঘটিত করেননি।
এখানে একজন রাজসাক্ষী বলেছেন, যা কিছু হয়েছে—সবই শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের নির্দেশে হয়েছে। তাদের (সেনা কর্মকর্তাদের) কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না।”
তিনি আরও জানান, অভিযুক্তদের সাবজেলে নেওয়া হতে পারে বলেও শুনেছেন। আদালতের নির্দেশ
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার–এর নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বুধবার সকালে এই আদেশ দেন।
প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন,
“আজ দুটি মামলায় মোট ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে হাজির করা হয়। এর মধ্যে ১০ জন র্যাবের টিএফআই সেলের নির্যাতনের মামলার আসামি।”
তিনি আরও জানান, ২০১৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (JIC)–এ বন্দিদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগেও তিনজন কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ মামলার পরবর্তী তারিখ ২০ নভেম্বর ২০২৫ নির্ধারণ করা হয়েছে।
সেনা বাহিনীর সহায়তা
কৌঁসুলি তাজুল ইসলাম জানান, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজিরের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনী সহায়তা দিয়েছে।
যেসব কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে কারাগারে
র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা (১০ জন):
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল
লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন
কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন
কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এলপিআর)
কর্নেল কে. এম. আজাদ
কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম
জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (৩ জন):
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিক
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজাহার সিদ্দিক
মেজর জেনারেল শেখ মো. সারওয়ার হোসেন
বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা (২ জন):
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম
মেজর রাফাত বিন আলম মুন
মামলার পলাতক আসামিরা
মামলার মোট আসামি ২৮ জন, তাদের মধ্যে ১৩ জন পলাতক।
ট্রাইব্যুনাল তাদের নাম পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে।
এই পলাতকদের মধ্যে রয়েছেন,
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ,
এবং সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী (অব.) প্রমুখ।
গ্রেপ্তার ও হাজির
সকাল ৭টার পর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রিজনভ্যানে করে সেনা কর্মকর্তাদের আদালতে আনা হয়।
তাদের সাধারণ পোশাকে দেখা যায়।
গত ৮ অক্টোবর আদালত আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
১১ অক্টোবর সেনা সদর থেকে জানানো হয়, ১৫ জনকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে,
এবং সেনানিবাসের একটি ভবনকে অস্থায়ী কারাগার ঘোষণা করা হয়।





























