
আওয়ার টাইমস নিউজ।
ডেস্ক রিপোর্ট: দক্ষিণ এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বায়ুদূষণ এখন জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতির জন্য মারাত্মক হুমকিতে পরিণত হয়েছে। ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমি থেকে হিমালয়ের পাদদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় বসবাসকারী প্রায় ১০০ কোটি মানুষ প্রতিদিনই বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হচ্ছে। এর ফল হিসেবে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১০ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু ঘটছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
সংস্থাটির সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও ভুটান, এই পাঁচ দেশেই দূষণের প্রভাব সবচেয়ে গভীর। শুধু স্বাস্থ্যঝুঁকিই নয়, বায়ুদূষণের কারণে এই অঞ্চলের অর্থনীতিতেও বড় ধাক্কা লেগেছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দূষণজনিত আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ সম্মিলিতভাবে আঞ্চলিক মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় ১০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে।
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, বায়ুদূষণের প্রধান উৎসগুলোর মধ্যে রয়েছে রান্না ও গরমের কাজে কঠিন জ্বালানির ব্যবহার, শিল্পকারখানায় অদক্ষভাবে জ্বালানি পোড়ানো, পুরোনো ও দূষণকারী যানবাহন, কৃষিজ অবশিষ্টাংশ পোড়ানো এবং ঘরোয়া ও বাণিজ্যিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, সমন্বিত ও বাস্তবমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা গেলে পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি সম্ভব। এ জন্য বিদ্যুৎচালিত রান্নাব্যবস্থার প্রসার, শিল্পকারখানা ও ইটভাটার আধুনিকীকরণ, বৈদ্যুতিক ও অ-মোটরচালিত পরিবহন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ, কৃষি ও পশুবর্জ্যের উন্নত ব্যবস্থাপনা এবং কার্যকর পুনর্ব্যবহার ব্যবস্থার ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন।
বিশ্বব্যাংক পরিষ্কার বায়ু নিশ্চিত করতে তিনটি মূল কৌশল তুলে ধরেছে, উৎস পর্যায়ে দূষণ কমানো, ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং শক্তিশালী নীতি ও আঞ্চলিক সমন্বয়ের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নিশ্চিত করা।
এ ছাড়া প্রতিবেদনে তথ্য, প্রণোদনা, প্রতিষ্ঠান ও অবকাঠামো, এই চারটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সংস্থাটির মতে, সরকারগুলোর যৌথ উদ্যোগ ও টেকসই বিনিয়োগই পারে বায়ুদূষণ কমিয়ে লাখো মানুষের জীবন রক্ষা করতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নির্মল বাতাস নিশ্চিত করতে।
সূত্র: বিশ্বব্যাংক




























