
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানে শিশু ও নারীসহ অসংখ্য বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর এবার কঠোর বার্তা দিল ইউরোপের অন্যতম শক্তিধর রাষ্ট্র জার্মানি। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ওয়াদেফুল জানিয়েছেন, ইসরাইল যদি মানবাধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত রাখে, তবে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞাসহ নানা পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে বার্লিন।
তিনি বলেন, “জার্মানি ইসরাইলের অস্তিত্বের পক্ষে এবং ইহুদিদের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে সেই সমর্থনের মানে এই নয় যে, আমরা চোখ বন্ধ করে বর্বরতা মেনে নেব। গাজায় যে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হচ্ছে, তা মানবিকতার চরম লঙ্ঘন। ইসরায়েলে যেসব অস্ত্র আমরা সরবরাহ করি, তা যদি শিশু হত্যায় ব্যবহৃত হয়—তবে সে রফতানি আমরা বন্ধ করব।
গাজা যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ ইসরাইলকে সরাসরি সমর্থন জানালেও সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে তাদের অবস্থানে পরিবর্তন আসছে। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ ফিনল্যান্ডের এক সম্মেলনে বলেন, “হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে ইসরাইল যা করছে, তা আসলে একতরফা গণবিধ্বংস। এই পথ মানবতাবিরোধী।”
ফ্রান্স, ব্রিটেন ও কানাডাও সম্প্রতি ইসরাইল নীতির পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা দিয়েছে।
সম্প্রতি জার্মানির অভ্যন্তরে পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, দেশটির ৫১ শতাংশ নাগরিক ইসরাইলে অস্ত্র সরবরাহের বিপক্ষে। যেখানে মাত্র ৩৬ শতাংশ এখনও ইসরাইলের পক্ষে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। ২০২১ সালে এই অনুপাত ছিল ৪৬ শতাংশ— যা স্পষ্টতই বড় একটি অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।
শিশুদের মৃত্যু, বিবেকের ধাক্কা!
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় চলমান অভিযানে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার শিশু নিহত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা, পানি, বিদ্যুৎ ও খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করা হয়েছে। এই অবস্থায় পশ্চিমা বিশ্বে ইসরাইল সমর্থনের পক্ষে থাকা অনেকেই এখন নৈতিক সংকটে ভুগছেন।
হিটলারের দেশ হিসেবে পরিচিত জার্মানির এই অবস্থান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি বড় বার্তা বহন করছে। অতীতে নাৎসি শাসনের দায়ে জার্মানি যেভাবে ইহুদি রাষ্ট্রকে সমর্থন দিয়েছে, সেই ইতিহাস এবার প্রশ্নের মুখে। ইসরায়েলের বর্তমান পদক্ষেপ মানবাধিকারের সীমা ছাড়িয়ে গেছে বলেই মনে করছে বিশ্ব সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশ।
মানবতার পক্ষে নীরব থাকা আর সম্ভব নয় বলে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন হিটলারের দেশ জার্মানি