
আওয়ার টাইমস নিউজ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলের একটি টার্গেটেড সামরিক অভিযানে নিহত হয়েছেন হামাসের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা মোহাম্মদ সিনওয়ার। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত মোহাম্মদ সিনওয়ার ছিলেন হামাসের সামরিক অপারেশনের প্রধান এবং ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ভাই—যিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের ইসরায়েলবিরোধী হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন এবং পরে নিহত হন।
প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা হামাসের নেতৃত্বকে একের পর এক নিশ্চিহ্ন করছি। মোহাম্মদ সিনওয়ারকে হত্যা করা হয়েছে, যিনি গাজার হামাস অপারেশনের মূল সমন্বয়ক ছিলেন।”
তবে নেতানিয়াহু তার এই ঘোষণায় ঠিক কখন এবং কোথায় মোহাম্মদ সিনওয়ারকে হত্যা করা হয়েছে, তা প্রকাশ করেননি।
ইসরায়েলি সামরিক সূত্র জানিয়েছে, গত ১৩ মে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ইউরোপিয়ান হাসপাতালের আশপাশে একটি বিমান হামলা চালানো হয়। তারা দাবি করে, ওই এলাকায় হামাসের একটি ভূগর্ভস্থ কমান্ড সেন্টার ধ্বংস করা হয়, যা মোহাম্মদ সিনওয়ারের সক্রিয় উপস্থিতির কেন্দ্র ছিল।
সেই হামলায় অন্তত ২৮ জনের মৃত্যু হয় বলে জানায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে হামাস এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে মোহাম্মদ সিনওয়ারের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেনি।
ইসরায়েল বহুদিন ধরেই মোহাম্মদ সিনওয়ারকে তাদের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় রেখেছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে হামাসের সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেডের জন্য গোপন টানেল নেটওয়ার্ক তৈরি ও পরিচালনার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, হামাস প্রায়ই তাদের শীর্ষ নেতাদের অবস্থান গোপন রাখে কৌশলগত কারণে, তাই এমন খবর প্রকাশের পরও গ্রুপটির পক্ষ থেকে দ্রুত প্রতিক্রিয়া না আসা অস্বাভাবিক নয়।
প্রসঙ্গত:
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস হঠাৎ করে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে একটি ভয়াবহ আক্রমণ চালায়। এতে প্রায় ১,২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর জবাবে ইসরায়েল শুরু করে গণবিধ্বংসী সামরিক অভিযান, যা এখন পর্যন্ত ৬০০ দিনের বেশি সময় ধরে চলমান।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের অভিযানে এ পর্যন্ত অন্তত ৫৪,০৮৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন—যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী ও শিশু।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়